বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) হর্টিকালচার বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহা. কামরুল হাছান জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থা- এফএওসহ উল্লেখযোগ্য দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানে পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালে তিনি অস্ট্র্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ড, সেন্ট লুসিয়া থেকে পোস্ট ডক্টরেট এবং ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ড, গ্যাটন থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার জেমস কুক ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স ডিগ্রি অর্জনের আগে তিনি বাকৃবি থেকে ১৯৯৬ সালে বিএস-সিএজি ও ১৯৯৮ সালে এমএস ইন হর্টিকালচার ডিগ্রি অর্জন করেন। মোহা. কামরুল হাছান ১৯৭০ সালে চুয়াডাঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন।
মোহা. কামরুল হাছান: এবারের খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্যে বলা হয়েছে, লিভ নো ওয়ান বিহাইন্ড অর্থাৎ কাউকে পেছনে না রাখা। আমরা জানি, অনেক মানুষ চাহিদা অনুসারে খেতে পারে না। অন্যদিকে আমরা অনেকে ব্যাপক খাবার অপচয় করি। আমরা খাবারের উপযুক্ত ব্যবহার করলে নিশ্চয়ই তা অন্যরা পেত। তা ছাড়া পেছনে থাকা মানুষদের কাছেও অপচয় করা খাবারটি পৌঁছানো যায়।
আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, ১২ থেকে ৩২ শতাংশ খাদ্য আগেই নষ্ট হয়ে যায়। নির্দিষ্টভাবে যদি বলি, ধান উৎপাদনের পর কৃষকদের থেকে বাজার পর্যন্ত যেতে মাঝখানে মধ্যস্বত্বভোগী, পরিবহন, গুদামজাতকরণ ইত্যাদিতে প্রায় ১৮ শতাংশ অপচয় হয়। গমে নষ্ট হয় সাড়ে ১৭ শতাংশ। আবার আম, কলা, আলু, গাজর, টমেটোসহ শাকসবজিতে অপচয়ের হারও ১৭ থেকে ৩২ শতাংশ। এমনিভাবে দুধ, ডিম, মাছ, মাংসও নষ্ট হচ্ছে। তবে এখন আধুনিক নানা প্রযুক্তির ব্যবহার ও সচেতনতা বাড়ার কারণে নষ্ট হওয়া কিছুটা কমেছে। ২০১০ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, ফল ও সবজির ক্ষেত্রে তখন অপচয়ের হার ছিল ২২-৪৪ শতাংশ।
জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সংস্থা- ইউনেপ ২০২১ সালে ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স নামে রিপোর্ট প্রকাশ করে। তারা দেখিয়েছে বাংলাদেশে বছরে এক কোটি ৬ লাখ টন খাদ্য অপচয় হয়। আমাদের গবেষণায় এসেছে, ধনী পরিবার এবং কিছু মধ্যবিত্ত পরিবারে প্রতি সপ্তাহে দুই কেজি খাবার অপচয় হয়। কিন্তু আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমাদের গবেষণায় উঠে এসেছে; সেটি হলো, নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র ৬০ শতাংশ পরিবারে কোনো খাবারই অপচয় হয় না।