খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংকগুলোর ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপ রয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকগুলো পদক্ষেপও নিচ্ছে। কিন্তু কোনো কৌশলই যেন কাজে লাগছে না। এমনকি খেলাপি না কমে উল্টো বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে কু ঋণ বা মন্দ ঋণের লাগাম টেনে ধরতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো। আর মন্দ ঋণের বিপরীতে শতভাগ সঞ্চিতি রক্ষায় বাড়তি চাপে পড়েছে অধিকাংশ ব্যাংক। সব মিলিয়ে মন্দ ঋণে হাবুডুবু খাচ্ছে ব্যাংকগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুন শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। তার মধ্যে মন্দ ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১২ হাজার ২১৯ কোটি টাকা, যা মোট খেলাপি ঋণের প্রায় ৮৯ দশমিক ৫৯ শতাংশের বেশি। আর মন্দ ঋণের পরিমাণ গত জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ছিল ১ লাখ ৩৭৪ কোটি টাকা। একই সময়ে মোট খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। সেই হিসাবেই তিন মাসে মন্দ ঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ হাজার ৮৪৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। এ ছাড়া গত জুন শেষে ৯টি ব্যাংক সঞ্চিতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মন্দ ঋণ ব্যাংকের জন্য সব সময় বড় দুশ্চিন্তার কারণ। কারণ, মন্দ ঋণ বাড়লে ব্যাংকগুলোর জন্য বাড়তি চাপ ও ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। যা গ্রাহকের আস্থার সংকটের ক্ষেত্র তৈরি করে। এ ছাড়া মন্দ মানের ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে শতভাগ সঞ্চিতি রাখতে হয়। এর সরাসরি চাপ পড়ে প্রতিষ্ঠানের আয়ের ওপর। ঋণ দেওয়ার সময় যোগ্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করলে খেলাপি কমত। আর ব্যাংকগুলো যদি ঋণ আদায় না করে অবলোপন কৌশলে ব্যালেন্স পরিষ্কার করে, তবে একটা সময় পর তা ব্যাংকের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।’