পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্পিতা। এই শিশু বয়সেই তার চোখে সমস্যা। দূরের জিনিস ঝাপসা দেখে। এ জন্য বাবার হাত ধরে চিকিৎসা নিতে এসেছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে অর্পিতার মতো বেশ কিছু শিশুকে চোখের সমস্যার কারণে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়।
অর্পিতার বাবা রাকিব হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চার বছর বয়স থেকে মাইয়োপিয়া বা চোখের ক্ষীণদৃষ্টি রোগে ভুগছে অর্পিতা। স্কুলের ক্লাস করার সময় পেছনে বসলে বোর্ডের লেখা ঝাপসা দেখত। আমরা ওকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই। চিকিৎসক তখন ওর এই সমস্যা শনাক্ত করেন। ’
রাকিব হাসান বলেন, ‘আমরা স্বামী-স্ত্রী চাকরি করি বলে আমাদের ব্যস্ত থাকতে হয়। এ জন্য সেভাবে খেয়াল রাখতে পারিনি মেয়ের দিকে। অর্পিতা একেবারে ছোট থেকে খুব কাছে বসে টিভি দেখত, মোবাইল ফোনে পড়াশোনা করত, গেমস খেলত। এসব তার চোখের সমস্যার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। ’
চিকিৎসকদের মতে, মায়োপিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিরা দূরের বস্তু ঝাপসা দেখে। নির্দিষ্ট ওই জিনিস বা বস্তুর দিকে এগোলে তা ক্রমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এর কারণ হলো, যখন আলো একটি মায়োপিক আক্রান্ত চোখে প্রবেশ করে, তখন এটি এমনভাবে বাঁকে, যা দূরের বস্তুকে ঝাপসা করে দেয়।
গত বছর ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের একদল গবেষক জানান, ঢাকার প্রতি ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীর চোখে সমস্যা রয়েছে। হাসপাতালের শিশু চক্ষুরোগ ও স্কুইন্ট বিভাগের প্রধান মো. মোস্তফার নেতৃত্বে দলটি ঢাকার ১৯টি স্কুলের ছয় হাজার ৪০১ শিক্ষার্থীর চোখ পরীক্ষা করে। এর মধ্যে আড়াই হাজারের বেশি শিশুর চোখে ত্রুটি খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। তাদের চশমা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এসব শিশু নার্সারি থেকে দশম শ্রেণিতে পড়ে। ঢাকার তুলনায় ঢাকার বাইরে এই হার কিছুটা কম।