চীন থেকে আনা ২০টি ডেমু ট্রেন অকেজো হয়ে পড়ার পর দেশের প্রকৌশলীদের প্রচেষ্টায় তার মধ্যে ৫টি সচল করা হয়েছে। এ ট্রেনগুলোর মধ্যে একটি আজ বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলস্টেশনে ডেমু ট্রেন চালুর উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম। উদ্বোধনের পর ট্রেনটি ৩৭ কিলোমিটার দূরের রংপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিকেলে আবার সেটি পার্বতীপুরে ফিরে আসে।
ট্রেন চালুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ডেমু ট্রেন শহর ও শহরতলির গন্তব্যে চলার কথা। কিন্তু আমরা তা দূরবর্তী গন্তব্যে চালিয়েছি। চীন আমাদের ট্রেন দিয়েছিল কিন্তু পাসওয়ার্ড (সফটওয়্যার) নিজেদের কাছে রেখেছিল।’ তিনি বলেন, ‘পাঁচটি ডেমু ট্রেন সচল আছে। আমাদের প্রকৌশলীরা মডিউল পরিবর্তন করে পার্বতীপুরের রেলওয়ে প্রকৌশলী ও বাইরের প্রকৌশলীদের সহযোগিতায় আরও একটি ট্রেন সচল করেছেন।’
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে চীন থেকে ২০ সেট ডেমু ট্রেন আমদানি করা হয় ২০১৩ সালে। উদ্দেশ্য ছিল ওই সব ট্রেনের মাধ্যমে কাছাকাছি দূরত্বে বেশি পরিমাণে যাত্রী পরিবহন করা। চীনের তানসন ইন্টারন্যাশনাল ও ডানিয়াল টেকনিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ডেমু ট্রেনগুলোর নির্মাতা। কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত ওই ট্রেনগুলো বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে পরিচালিত। এ প্রযুক্তি ডেমু ট্রেন সরবরাহকারী চীনের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে কখনো দেয়নি।
এর মডিউল বিকল হলে নতুন মডিউলের সঙ্গে সফটওয়্যার সেটআপ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিত। এর জন্য ধরনা দিতে হতো চীনের প্রকৌশলীদের কাছে, যা ছিল ব্যয়বহুল। একটি ডেমুতে ৪০টি মডিউল আছে। এর একেকটির দাম প্রায় সাত লাখ টাকা। চীনা প্রকৌশলীরা প্রযুক্তি হস্তান্তর না করায় একটির পর একটি ডেমু ট্রেন বিকল হতে থাকে।
এ জন্য দেশের প্রকৌশলীদের চেষ্টায় এ ট্রেনগুলো সচল করা হচ্ছে। নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাজপুরের পার্বতীপুর ডিজেল ওয়ার্কশপে সচল করা হয়েছে পাঁচটি ডেমু ট্রেন। একই প্রযুক্তিতে বাকি ১৫টি ডেমু ট্রেনও মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।