ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ জাতিকে তাদের যে রূপ দেখাল, তাকে কী নামে অভিহিত করা যায়? এটা নিশ্চয় নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের কোনো রূপ নয়। তাদের এই বিশ্রী মারামারি এবং অভিযোগ দেখা-শোনার পর থেকে মাথা থেকে বিষয়টা কিছুতেই যাচ্ছে না। এই ছাত্রীদের নিয়ে আমাদের চিন্তা এই কারণে বেশি যে এরা ছাত্রলীগের একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের নেতাকর্মী। ছাত্রলীগের পদধারী সদস্য হলে তার মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। ইডেন কলেজের ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে যে ধরনের অভিযোগ এসেছে সেটি উল্লেখ করাও খুব বিব্রতকর এবং লজ্জার। এই মারাত্মক লজ্জাজনক অভিযোগ কতখানি সত্য সেটি বলতে পারবে দেশের পুলিশ এবং ডিবির লোকজন। কারণ সমাজের অন্ধকার অংশের নানা খবর তাদের কাছেই বেশি থাকে। সঠিক তদন্ত হলে হয়তো প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। আমরাও চাই এই মারাত্মক লজ্জাজনক অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হোক। কিন্তু সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া এত বড় একটা অভিযোগ অস্বীকার করার প্রবণতাও কোনোভাবেই কাম্য নয়। অথচ কলেজের প্রিন্সিপাল অভিযোগ অস্বীকার করেই দায়িত্ব সেরেছেন বলে মনে হচ্ছে।
ইডেন কলেজ-সংক্রান্ত সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে দুটো সত্তা প্রাধান্য পাবে আমার কাছে। প্রথমত ছাত্রলীগ, দ্বিতীয়ত ইডেন কলেজ। ছাত্রলীগ আমার কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে। কারণ ছাত্রলীগ এমন একটি সংগঠন যার নেতাকর্মীরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতার জন্য মুজিব বাহিনী নামে পুরো একটা বাহিনী গঠন করে অকাতরে নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন। বিশ্বের আর কয়টা ছাত্র সংগঠনের এমন ইতিহাস আছে আমার জানা নেই। পাকিস্তান থেকে বের করে এনে বাংলাদেশ নামের স্বাধীন রাষ্ট্র অর্জন করবেন বলে বাঙালির নতুন প্রজন্মকে সাহসী আর বীরের শক্তিতে নির্মাণ করার পরিকল্পনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজ উদ্যোগে ১৯৪৯ সালে ছাত্রলীগের জন্ম দেন। ছাত্রলীগের বর্তমান যতই বিতর্কিত হোক না কেন, এর গৌরবময় অতীত বাংলাদেশপ্রেমী যে কেউ স্বীকার করতে বাধ্য।