এক শ পাঁচ বছর আগে রুশ দেশে একটা বিপ্লব ঘটেছিল, কিন্তু সেটা কেবল সেই দেশের ব্যাপার ছিল না, ব্যাপার ছিল সারা বিশ্বের। সেটি ছিল এমন একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক বিপ্লব, যা বিশ্বকে বদলে দিয়েছে। এই বিপ্লব মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাম্য প্রতিষ্ঠিত করেছিল। সাম্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা আগেও হয়েছে, দার্শনিক ও লেখকেরা স্বপ্ন দেখেছেন, ১৭৮৯ সালে ফরাসি দেশে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সাম্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হয়েছিল। আওয়াজটা ছিল স্বাধীনতা, সাম্য ও মৈত্রীর। স্বাধীনতা এসেছিল কেবল ধনীদের জন্য, ফলে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
৮১ বছর পরে ওই ফরাসি দেশেরই রাজধানীতে, প্যারিসে আরেকটি বিপ্লব হয়, সেই বিপ্লবে সাম্য অর্জিত হয়েছিল। নেতৃত্ব ছিল মেহনতি মানুষদের। সেখানে গৃহযুদ্ধ হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ প্রাণ দিয়েছে। সাম্যব্যবস্থা টিকে ছিল ৭২ দিন, তারপর টিকে থাকতে পারেনি। ৪৫ বছর পরে, ১৯১৭ সালে আগের সব প্রচেষ্টার অভিজ্ঞতা থেকে সারবস্তু এবং রুশ দেশের সমাজ ও অর্থনীতি সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞানের প্রয়োগের মধ্য দিয়ে সোভিয়েত বিপ্লব ঘটে। সোভিয়েত ইউনিয়ন টিকে ছিল ৭২ বছর।
সেখানে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হলো। ব্যক্তিমালিকানার জায়গায় এল সামাজিক মালিকানা এবং দেশটি বলতে পারল—আমাদের এখানে একটি মানুষও অভুক্ত নেই, কেউ নিরক্ষর নয়, বাস্তুহারা নয়, গণিকাবৃত্তির নাম-নিশানা নেই। তারপর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব হয়েছে পূর্ব ইউরোপে, চীনে, কিউবা ও ভিয়েতনামে। বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ শোষণ থেকে মুক্তির স্বাদ পেয়েছিল সমাজতন্ত্রের মধ্য দিয়ে। উন্নতি ঘটেছিল অভূতপূর্ব।