এই লেখাটি পাঠক যেদিন পড়বেন সেদিন, দুর্গোৎসবের শেষ দিন। মর্ত্য থেকে আজ কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে যাবেন দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গা। আর এর মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের দশমী তিথিতে পিতৃগৃহ ছেড়ে কৈলাসে স্বামীগৃহে পাড়ি দেন দেবী। সেই কারণেই এই তিথিকে ‘বিজয়া দশমী’ বলা হয়। পৌরাণিক কাহিনি মতে, মহিষাসুরের সঙ্গে নয় দিন নয় রাত্রি যুদ্ধ করার পর দশম দিনে তার বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছিলেন মা দুর্গা। তাই এই দিনটিকে ‘বিজয়া’ বলা হয়। দেবী দুর্গা অসুরদের দলপতি মহিষাসুরকে বধ করে দেবকুলকে রক্ষা করেছিলেন। তার এই জয়ের মধ্য দিয়ে অন্যায় ও অশুভের বিরুদ্ধে ন্যায় ও শুভশক্তির জয় হয়েছিল।
দুর্গাপূজাকে বাঙালি হিন্দুর প্রধান উৎসব বলা হলেও ত্রিপুরা, হাজং, বানাই, পাত্র, কোচ, মাহাতোসহ ভিন্ন ভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষও দুর্গা পূজা করে থাকেন। বাংলাদেশে বসবাসকারী বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষের আটপৌরে সংসারে হাজারো না পাওয়ার হতাশা, ব্যর্থতা এবং বিপর্যয়ের মধ্যেও অনেক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে দেবী দুর্গার উপাসনা করে এই বিশ্বাস নিয়ে যে দেবী তার সব দুর্গতি মোচন করবেন।
হিন্দু শাস্ত্র মতে, দেবী দুর্গার মর্তে আগমন ও গমন যে বাহনে, তার ওপর নির্ভর করে গোটা বছরটা পৃথিবীবাসীর কেমন কাটবে। ওই দিক থেকে এবারের দুর্গাপূজা বিশ্ববাসীর জন্য শুভ। শাস্ত্রানুযায়ী, সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। সাধারণত প্রতি বছর সপ্তমী ও দশমী কী বার পড়ছে তার ওপর নির্ভর করে দেবীর কিসে আগমন এবং গমন সেটা বোঝা যায়। এই বছর দেবী দুর্গার আগমন গজে, যার অর্থ শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা। কৈলাসে ফিরবেন নৌকায় যা মূলত শস্য বৃদ্ধি ও জল বৃদ্ধির ইঙ্গিতবাহী।