বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্যস্ততম জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে যেসব অবকাঠামো রয়েছে, তা দিয়ে প্রতিদিন ২২টি ট্রেন চলার কথা। কিন্তু সেকশনটিতে প্রতিদিন চলছে ৪২টি ট্রেন। সেকশনটি সিঙ্গেল লাইনের। একটি ট্রেন কোনো স্টেশন ত্যাগ করার পর পরবর্তী স্টেশনে না পৌঁছানো পর্যন্ত সেখানে আর কোনো ট্রেন প্রবেশের সুযোগ থাকে না। যেহেতু সক্ষমতার দ্বিগুণ ট্রেন চলছে, তাই প্রতিটি ট্রেনেরই ক্রসিংয়ে বাড়তি সময় ব্যয় করতে হয়। এর বিরূপ প্রভাব পড়ে ট্রেনের গতিতে। ফলে ঢাকা থেকে রাজশাহী, খুলনা, দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও রংপুরগামী ট্রেনগুলোর বেশির ভাগই নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারছে না।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রায় পুরোটাই মিটার গেজ লাইন। মিটার গেজ লাইনে চালানোর জন্য দক্ষিণ কোরিয়া থেকে কেনা ৩০টি ইঞ্জিন সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে রেলের বহরে। তবে চট্টগ্রাম-সিলেট, চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ, ঢাকা-নোয়াখালী, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ ও ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে নতুন ইঞ্জিনগুলো চালানো সম্ভব হচ্ছে না। কারণ এসব রুটের রেলপথ ও রেলসেতু নতুন কেনা ইঞ্জিনগুলোর ভার বহনে সক্ষম নয়। আর যেসব পুরনো ইঞ্জিন দিয়ে এসব রুটে ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে, সক্ষমতা কমে যাওয়ায় সেগুলোর গতি থাকে কম। যার কারণে গন্তব্যে পৌঁছতে সময় লাগে বেশি।
রেলওয়ের সক্ষমতায় এসব ঘাটতি সার্বিকভাবে প্রভাব ফেলেছে ট্রেনের সময়সূচিতে। বর্তমানে ৫২ নম্বর ওয়ার্কিং টাইম টেবিলে ট্রেন পরিচালিত হচ্ছে। ৫১ নম্বর ওয়ার্কিং টাইম টেবিলের চেয়ে বর্তমান টাইম-টেবিলে বেশির ভাগ ট্রেনের রানিং টাইম বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ ট্রেনগুলোর গতি কমেছে। পূর্বাঞ্চলের ৪৬টি আন্তঃনগর ট্রেনের মধ্যে ২১টির রানিং টাইম বেড়েছে। বিপরীতে রানিং টাইম সামান্য কমেছে ১৬টি ট্রেনের। পঞ্চিমাঞ্চলের ৪২টি আন্তঃনগর ট্রেনের মধ্যে ১৮টির রানিং টাইম বেড়েছে, সামান্য কমেছে ১৪টির।