বিশ্বজুড়ে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন ভাড়া ৫০ শতাংশের বেশি কমেছে। চীন-ইউরোপ, চীন-আমেরিকা রুটে যেমন ভাড়া কমেছে, তেমনি বাংলাদেশমুখী রুটেও পণ্য পরিবহন ভাড়া সমানভাবে কমেছে। অবস্থা এমন যে এ ভাড়া প্রতিদিনই কমছে। কমতে কমতে করোনা মহামারির আগের অবস্থায় ফিরেছে জাহাজভাড়া।
জাহাজভাড়া কমানোর ফলে পণ্য আমদানিতে ব্যয় অনেক কমেছে; কিন্তু দেশে পণ্যের দামে এর প্রভাব এখনো পড়েনি। আমদানিকারকরা বলছেন, জাহাজভাড়া কমলেও ডলারের দামে অস্থিতিশীলতার কারণে এর পুরোপুরি সুফল পাওয়া যায়নি।
সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন ভাড়া কমার কথা স্বীকার করে গ্যালাক্সি বাংলাদেশ লজিস্টিকসের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনতাসির রুবাইয়াত কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন ভাড়া ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলের বন্দরে ৪০ ফুটের একটি কনটেইনারের পণ্য পরিবহন ভাড়া সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ হাজার মার্কিন ডলার, অক্টোবরে সেটি হয়েছে পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার। আর যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের বন্দরে যে ভাড়া ১০-১১ হাজার ডলার ছিল, এখন সেটি ছয়-সাত হাজার মার্কিন ডলার। আর ইউরোপের বন্দরে পণ্য পরিবহন ভাড়া সাত হাজার ডলার থেকে কমে এখন চার থেকে সাড়ে চার হাজার ডলারে নেমেছে। পণ্য পরিবহন চাপ কম থাকায় জাহাজভাড়া প্রতিদিনই কমছে।
ভাড়া কমানোর কারণ জানতে চাইলে সাইফ মেরিটাইম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ জহীর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘করোনা মহামারি কাটিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার দেখে যখন শিপিং ব্যবসায়ীরা জাহাজ নামানো শুরু করছিলেন, বন্ধ হওয়া ও নতুন শিপিং রুট চালু করছিলেন এবং পণ্য পরিবহনের জন্য জাহাজ ভাড়া নিচ্ছিলেন, তখনই বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দাবস্থা শুরু হয়। এখন বিশ্বজুড়েই পণ্যের দাম বাড়ায় ভোক্তা চাহিদা কমেছে। ভোগ কমায় স্বাভাবিকভাবে পণ্য পরিবহনও কমে গেছে। পণ্য বুকিং কম থাকায় জাহাজ মালিকরা ন্যূনতম ভাড়ায় পণ্য পরিবহনের অফার করছিলেন। আর প্রতিযোগিতা দিতে গিয়েই ভাড়া ৫০ শতাংশের বেশি কমেছে। এর ফলে শিপিং লাইনগুলো বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ’