আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কিছু শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে সে দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। নিজ দেশে অহরহ বিচারহীন হত্যা হলেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তাদের। এদিকে দেশের রাজনৈতিক মঞ্চগুলো দিনের পর দিন কঠোর সুরে ‘গুম-হত্যা-অপহরণের’ বিরুদ্ধে সরগরম। সুযোগ পেলেই আওয়ামী লীগ সরকারকে গুমের রাজনীতির প্রবর্তক বানাতে কসুর করছে না। এই মুহূর্তে যে মানুষটি পত্রিকা পড়ছেন কিংবা বিএনপির সমাবেশে গিয়ে বক্তৃতা শুনছেন তারা স্পষ্টতই ধরে নেবেন, গুম নামক বিশেষণটি তৈরিই হয়েছে আওয়ামী লীগের হাতে। তারা এমনও ভাবতে পারেন, ইতোপূর্বে প্রতিটি সরকারের আমলই এমন অমানবিক বিষয়টি থেকে অনেক দূরে ছিল। বিশেষ করে বিএনপি যখন বলে, আওয়ামী লীগ টিকে আছে গুমের রাজনীতি মাধ্যমে তখন কারও কারও এমনটাই বিশ্বাসও হতে পারে।
খুব আগ্রহ জাগে এই অক্টোবরে কি গুম খুন নিয়ে তারা কোনও কথা বলবেন? অক্টোবর প্রসঙ্গটি আনার কারণ আছে। ১৯৭৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিন থেকে শুরু হয়েছিল ব্যাপক আকারে রাষ্ট্রীয়ভাবে গুম আর হত্যা। তার আগেও হয়েছে, তবে সংখ্যায় কম। আর তখন এই দেশের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। ৩০ সেপ্টেম্বর বগুড়ায় একটি অভ্যুত্থান হয়েছিল জিয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে। প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নির্বিচারে খুন শুরু করলেন। এন্থনি ম্যাসকারানহাস ‘অ্যা লিগেসি অব ব্লাড’ বইয়ে স্পষ্ট উল্লেখ করলেন, বগুড়া অভ্যুত্থানের সূত্র ধরে পরবর্তী দুই মাসে ১১৪৩ জন সৈনিককে মৃত্যুদণ্ড ভোগ করতে হয় একজন জেনারেলের এক কলমের খোঁচায়।
অক্টোবরের ২ তারিখে হলো আরেকটা অভ্যুত্থান। বিমান বাহিনীর ইতিহাস বইয়ে তথ্য প্রকাশ হয়েছে, সেই অভিযোগে ৫৬১ জনকে হত্যা করা হয়। অন্যান্য গ্রন্থে উল্লেখ আছে সেনাবাহিনী ও অন্যদের নিয়ে এই অভিযোগে ১৩০০ জনকে হত্যা করা হয়। কতটা নৃশংস ছিল সেই চিত্র।