হায়রে রাজনীতি! দেশের চেয়ে দলই মুখ্য রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কাছে। সাধারণত দেখা যায়, নির্বাচন ঘনিয়ে এলে রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়ে। বেপরোয়া হয়ে ওঠে রাজনৈতিক অঙ্গন। কে, কী, কখন বলছে, তার মানে গিয়ে কী দাঁড়াচ্ছে, সেই সবের কোনোতোয়াক্কা নেই। হিংসাত্মক, আক্রমণাত্মক মনোভাব কমবেশি সবার লেগেই থাকে। ভোট চাইতে গিয়ে তাঁরা যতটা নমনীয় থাকেন, আদতে তাঁরা মোটেও তা নন। পেশিশক্তি প্রদর্শনেও কেউ কারও চেয়ে কম যান না। সম্প্রতি নতুন ধরনের রাজনৈতিক আচরণ মিডিয়ার বদৌলতে দেখা গেল। বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক দলের একটি সমাবেশে সমবেত নেতা-কর্মীরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বাঁশের মাথায় বেঁধে সেই বাঁশ দিয়ে প্রতিপক্ষ ও পুলিশ সদস্যকে পেটাচ্ছেন। রাজনৈতিক উন্মাদনায় জাতীয় পতাকাকেও অপব্যবহার করা!
বলা বাহুল্য, ইতিপূর্বে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে এমন রাজনৈতিক আচরণ দেখা গেছে বলে মনে পড়ে না। অনেকের হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বাঁধা বাঁশ। প্রতিপক্ষকে আঘাত করা হচ্ছে পতাকা বাঁধা বাঁশ দিয়ে। যখন আঘাত করা হচ্ছিল, তখন পতাকা বাঁশের সঙ্গে প্রতিপক্ষের শরীরে আছড়ে পড়ছিল। পতাকা অগোছালো, লেপ্টে আছে বাঁশে। যেভাবে আঘাত করা হচ্ছিল, তাতে পতাকা ছিঁড়ে যাওয়ার কথা। দলটির দলীয় পতাকা একটা কি দুইটা তার মাঝে ছিল, কিন্তু সেগুলো দিয়ে আঘাত করা হচ্ছিল বলে মনে হয়নি। যাই হোক, দলীয় পতাকা উড়ছে আর বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখে নিঃসন্দেহে মনে হয়েছে যে এটি একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক আচরণ, যা সাধারণ মানুষের কাঙ্ক্ষিত নয় এবং যার উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য কেবল দলের লোকজনই বলতে পারেন। বলতে হয়, পতাকা নিয়ে এমন আচরণ দেখে মর্মাহত হয়েছি। এককথায়, ভালো লাগেনি। মনে হয়েছে, জাতীয়তাবাদী এই দল তার রাজনৈতিক দর্শনে আওয়ামী লীগকে নয়, বরং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হেনেছে, জাতীয় পতাকার প্রতি চরম অবমাননা প্রদর্শন করেছে।