বাংলাদেশে আমরা যেন হঠাৎ নারীশক্তি আবিষ্কার করেছি। সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়েদের দুর্দান্ত জয়ের পর তাঁরা সবাই প্রশংসার বন্যায় ভাসছেন। রাস্তায় ট্রাকমিছিল, পত্রিকার প্রথম পাতায় খবরের শিরোনাম, নগদ পুরস্কার। কারও কারও জন্য বসতবাড়ি নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হচ্ছে।
সাফ গেমস ছিল নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য মেয়েদের এক পরীক্ষা। সে পরীক্ষায় তাঁরা জিতেছেন। নিজেদের একাগ্রতা, পরিশ্রম আর অদম্য সাহস—এই পুঁজি নিয়েই তাঁরা মাঠে নেমেছিলেন।
কর্তাব্যক্তিরা কেউ ভাবেননি, তাঁরা ট্রফি নিয়ে ঘরে ফিরবেন। তাঁদের ব্যাপারে উপেক্ষা এতটাই তীব্র ছিল যে ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি নিজ দলের মেয়েদের খেলা দেখতে মাঠে যাওয়ার প্রয়োজনটুকু পর্যন্ত বোধ করেননি।
ঠিক কীভাবে, আর কতবার নিজের যোগ্যতা প্রমাণে মেয়েদের পরীক্ষা দিতে হবে? এই শিরোপাজয়ী মেয়েদের অধিকাংশই গ্রাম থেকে উঠে আসা মানুষ, অনেকে প্রান্তিক শ্রেণিভুক্ত, অভাবী।
কারও কারও বাসযোগ্য বসতবাটি নেই, নিয়মিত আয় নেই। ঘরে টিভি না থাকায় অনেকের মা–বাবা কখনো সন্তানদের খেলাও হয়তো দেখেননি। ফুটবল ক্যাম্পে না এলে এসব মেয়ের অনেকের ভালোমন্দ খাবারটুকুও জুটত না। তাঁরা খবরের শিরোনাম হননি, কেউ স্পনসরশিপ পাননি অথবা ক্রিকেট তারকাদের মতো বিজ্ঞাপনের মুখ হয়ে ওঠেননি। তাঁদের জয়ে আমরা এখন যত হাততালিই দিই না কেন, এর পেছনে আমাদের অবদান সামান্যই।