চিত্ত তার ভয়শূন্য

দেশ রূপান্তর তোফায়েল আহমেদ প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:১৮

বাংলার গণমানুষের নন্দিত নেত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব প্রদানকারী দল আওয়ামী লীগকে দীর্ঘ ৪ দশক নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়ে জেল-জুলুম ও মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে জনগণের রায় নিয়ে চারবার সরকারে অধিষ্ঠিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর কতিপয় বিশ্বাসঘাতকের হাতে সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্মমভাবে নিহত হন। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যান। ৮১-এর ১৭ মে নির্বাসন শেষে স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রিয় মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন। দিনটিতে শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল না, ছিল সর্বব্যাপী সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দুর্যোগ। স্বৈরশাসনের অন্ধকারে নিমজ্জিত স্বদেশে তিনি হয়ে ওঠেন আলোকবর্তিকা, অন্ধকারের অমানিশা দূর করে আলোর পথযাত্রী।


আওয়ামী লীগের ক্রান্তিকালে তিনি দলের হাল ধরেন। ৮১-এর ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিলে সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে আওয়ামী লীগের ঐক্য ধরে রেখে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাতেই তুলে দিয়েছিলাম দলের রক্তেভেজা সংগ্রামী পতাকা। শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে দলীয় ও জাতীয় ঐক্যের বৃহত্তর প্রয়োজনে তার আগমন এবং নেতৃত্ব গ্রহণ। তিনি দেশে ফেরার আগে স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়ার নির্দেশে ‘শেখ হাসিনা আগমন প্রতিরোধ কমিটি’ গঠিত হয়েছিল। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে গণবিরোধী স্বৈরশাসকের ভিত কেঁপে উঠেছিল। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে সামরিক শাসনবিরোধী গণ-আন্দোলন সংগঠিত করেন। সামরিক শাসকের নির্দেশে ৮৩-এর ফেব্রুয়ারিতে তাকেসহ আমাদের শীর্ষ নেতাদের সামরিক গোয়েন্দারা চোখ বেঁধে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায় এবং বিনা কারণে একটানা ১৫ দিন আমাদের আটক রাখা হয়। ৮৪-এর ফেব্রুয়ারি ও নভেম্বরে নেত্রীকে গৃহবন্দি করা হয়। ৮৫-এর মার্চে তাকে তিন মাস এবং আমাকে ছয় মাস বিনা বিচারে আটক রাখা হয়। জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকাকালে ৮৬-এর ১০ নভেম্বর তিনি যখন সচিবালয় অবরোধ কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, তখন পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গাড়িতে উপবিষ্ট থাকা অবস্থায় তার গাড়ি ক্রেন দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরদিন ১১ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে এক মাসের আটকাদেশ দেওয়া হয়। ৮৮-এর ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গাড়িবহরে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে যান। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যাকে রক্ষায় বহু নেতাকর্মী প্রাণ বিসর্জন দেন। ৯০-এর ২৭ নভেম্বর জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর শেখ হাসিনাকে অন্তরীণ করা হয়; প্রবল গণরোষের ভয়ে সামরিক সরকার ওই দিনই তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানের পর ৯১-এর ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনের প্রাক্কালে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। ৯৪-এ তার আহ্বানে ট্রেন মার্চের সময় ঈশ্বরদী রেলস্টেশনের উত্তরপ্রান্তে বন্দুকধারীরা তার কামরা লক্ষ্য করে গুলি করে। সেদিনও তিনি সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান। ২০০৯-এর ফেব্রুয়ারিতে পিলখানা হত্যাযজ্ঞের পর ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের ১৪-১৫ মার্চ সংখ্যায় প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি নিজের জীবনের জন্য ভীত হয়ে পড়লে পুরো জাতি ভীত হয়ে পড়বে। আমি জানি, বুলেট আমায় তাড়া করছে।’ ঘাতকের সর্বশেষ নিষ্ঠুর আঘাত এসেছিল ২০০৪-এর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মধ্য দিয়ে। সেদিন প্রিয় নেত্রী প্রাণে বেঁচে গেলেও জীবন দিতে হয়েছে আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মীকে। শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২১ বার হামলা হয়েছে। অকুতোভয় শেখ হাসিনার বড় বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর মতোই অসীম সাহসী, চিত্ত তার ভয়শূন্য!

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us