দীর্ঘতম সৈকত, পাহাড়-ঝরনা আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজারের সম্ভাবনা যেমন, সমস্যাও অনেক। বিশ্বের একমাত্র দীর্ঘতম ১২০ কিলোমিটার বালুকাময় সমুদ্রসৈকতের শহর কক্সবাজার। বিভিন্ন দেশের সমুদ্রসৈকতের চেয়ে এ সমুদ্রসৈকত আলাদা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হওয়ায় এখানে পর্যটকদের সমাগম বেশি। এর রয়েছে অপার সম্ভাবনা। তবে শুধুই সমুদ্রসৈকত দিয়ে এ জেলার পর্যটনশিল্প সীমাবদ্ধ নয়। রয়েছে পাথুরে বিচ ইনানি, পাহাড়ি ঝরনা হিমছড়ি, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, পাহাড় আর সমুদ্রের বুকে মেরিন ড্রাইভ সড়ক, মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপ, আদিনাথ মন্দির, রামু বৌদ্ধবিহার, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলো যে যার সৌন্দর্যে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। এ পর্যটন স্পট ঘিরে রয়েছে ৭টির মতো তারকামানের হোটেলসহ পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউজ ও কটেজ। রয়েছে ঐতিহ্যবাহী মার্কেট, শুঁটকির দোকান ও উৎপাদনকেন্দ্র।
এ জেলার অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতকে বিশ্বের বুকে অনন্য পর্যটন স্থান হিসাবে গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী বাস্তবায়ন করছেন একের পর এক মহাপরিকল্পনা। কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ করে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীতকরণের কাজ অনেকটা শেষের পথে। এছাড়া কক্সবাজারকে রেল সংযোগের সঙ্গে যুক্ত করার কাজও চলছে জোরেশোরে। চলছে পর্যটন শহরের হলিডে মোড় থেকে বাজারঘাটা হয়ে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন সড়ক সংস্কার কাজ।
বর্তমানে কক্সবাজার পর্যটনশিল্পে নতুন করে আশার সঞ্চার করছে কেয়েকটি মেগা প্রকল্প। যার মধ্যে অন্যতম ‘সাবরাং ট্যুরিজম অর্থনৈতিক অঞ্চল’ নামে পরিচিত। ২০১৬ সালে টেকনাফ সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক উন্নয়নকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যোগাযোগব্যবস্থা ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি সরকার হাত দিয়েছে ট্যুরিজমেও। টেকনাফে অর্থনৈতিক অঞ্চল সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক জোনে ১ হাজার ১৬৫ একর জমি রয়েছে। পাহাড় ও সাগরের বৈচিত্র্যময় দৃশ্য, সুদীর্ঘ বালুকাময় সৈকত এ স্থানকে সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিণত করেছে। সাবরাং ট্যুরিজম পার্কটি বিনোদনপ্রেমীদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হবে। পার্কটি বাস্তবায়ন হলে দেশের পর্যটন খাতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৭০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করছে বাস্তবায়ন সংস্থা বেজা কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞাপন