রাঙামাটির বরকল উপজেলার আইমাছড়া ইউনিয়ের ১৭৪ নম্বর রামুক্যাছড়ি মৌজা। এ মৌজার সঙ্গে উপজেলা কিংবা জেলা সদরে সড়কপথে যোগাযোগের কোনো ব্যবস্থা নেই। মূলত পাহাড় ও ঘন জঙ্গলের কারণে খুবই দুর্গম। উপজেলা কিংবা জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথ নদী। রামুক্যাছড়ি থেকে উপজেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার। জেলা সদরের দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার।
যেকোনো প্রয়োজনে কর্ণফুলী ও ঠেগা নৌপথে জেলা-উপজেলা সদরে যেতে হয়। বর্ষায় ইঞ্জিনচালিত ছোট নৌকায় যাতায়াত করতে পারলেও নদীর পানি কমলেই রামুক্যাছড়ির বাসিন্দাদের পড়তে হয় বিপাকে। তখন বৈঠা ঠেলে নৌকা কিংবা বাঁশের ভেলায় যাতায়াত করতে হয়। রামুক্যাছড়ির মানুষ বরকলের বাসিন্দা হলেও নির্ভর করেন জুরাছড়ি উপজেলার ওপর। কারণ, রামুক্যাছড়ি থেকে জুরাছড়ি হাঁটা পথে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে।
১৬টি পাড়া ও চারটি গ্রাম নিয়ে রামুক্যাছড়ি মৌজা গঠিত। গ্রাম চারটি হলো মেম্বারপাড়া, গোইহাট ছড়া, নোয়াপাড়া ও রামুক্যাছড়ি বা গুইছড়ি। জনসংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। মৌজার শতভাগ লোকই কৃষিজীবী। সম্প্রতি জুরাছড়ি উপজেলা হয়ে দেড় দিন হেঁটে রামুক্যাছড়ি গিয়ে দেখা গেছে, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই, সবাই পাহাড়ের ঝরনার পানি পান করেন।
মৌজার বাসিন্দা লক্ষ্মীধন চাকমা (৬০) বলেন, ‘রামুক্যাছড়ি মৌজায় নেই কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান। নেই স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র। ফলে সরকারের বিভিন্ন সময়ের টিকাদান কর্মসূচি থেকে বঞ্চিত এ মৌজার শিশুরা। আছে প্রসূতিমৃত্যু।’ একই কথা বলেন প্রীতি বিন্দু চাকমা (৪৫), বিনা মোহন চাকমা (৪৫), চিত্র রঞ্জন চাকমা (৪৫) ও স্নেহ কুমার চাকমা (৫০) স্নেহ কুমার চাকমা। স্নেহ কুমার চাকমা আঙুল গুনে গুনে বলেন, গত ৩ বছরে ৪ জন প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।