আমার ধারণা, বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ ইতিমধ্যে সাফজয়ী সানজিদার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি পড়ে ফেলেছেন। এবং নিজেকে দিয়ে বুঝতে পারি, স্ট্যাটাসটি অনেক মানুষ শুধু একবার নয়, বারবার পড়েছেন। পড়ে আপ্লুত হয়েছেন, হেসেছেন, কেঁদেছেন। এরপর আবার অন্য কাউকে পড়েও শুনিয়েছেন। বারবার শব্দগুলো উচ্চারণ করে নিজের আনন্দ ও গর্বকে বহুগুণে বাড়ানোর এ সুযোগকে যথাসম্ভব কাজে লাগিয়েছেন। শুধু আমার এক বন্ধু মিনমিন করে বলার চেষ্টা করেছিল যে লেখাটাতে ব্যাকরণগত কিছু ভুল আছে। আমি ওকে বললাম, খুব বেশি প্রয়োজন হলে এ ক্ষেত্রে ব্যাকরণটাই পরিবর্তন করতে হবে। এখানে যে সততা আছে, সরলতা আছে, নিষ্ঠা আছে, আবেগ আছে এবং সর্বোপরি সত্যের চেয়েও বড় যে সত্য আছে, সেসবের ব্যাকরণ ঠিক করতে গেলে এ লেখার মান কমবে, বৈ বাড়বে না।
বহুদিন আগে লেখা সম্পর্কে আর্নেস্ট হেমিংওয়ের কিছু মন্তব্য পড়ে জেনেছিলাম, ভালো লেখা মানেই এর মধ্যে সততা থাকবে। গদ্য হবে একেবারে পরিষ্কার, ঝরঝরে। হেমিংওয়ে এ-ও বলেছেন, ভালো লেখা গদ্য হলেও তা নিরেট গদ্য হয় না, এর আড়ালে কবিতা থাকে। এসব লেখায় সত্য না থাকলেও চলে, তবে সত্যের চেয়েও বড় যে সত্য, তা থাকা চাই। সানজিদা লেখক নন। তারপরও হেমিংওয়ে উল্লিখিত প্রতিটি বৈশিষ্ট্য তাঁর লেখায় আছে। সততা, গদ্য, কবিতা, সত্যের চেয়েও বড় সত্য—সব।
সবাই পড়েছেন। তারপরও ওখান থেকে দু-একটা লাইন উদ্ধৃত করার লোভ সামলাতে পারছি না। ফাইনালের আগে তিনি লিখলেন, ‘যাঁরা আমাদের এই স্বপ্নকে আলিঙ্গন করতে উৎসুক হয়ে আছেন, সেসব স্বপ্নসারথির জন্য এটি আমরা জিততে চাই।