বিজ্ঞানের ইতিহাস শুধুমাত্র বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারগুলোর নীরস বর্ণনা নয়। বিজ্ঞানের ইতিহাস হলো বিজ্ঞান ও মানুষের মধ্যকার সম্পর্কের গল্প। এর সূচনা সভ্যতার শুরুতে। তারপর যুগে যুগে বিভিন্ন পরিবর্তন ও উন্নয়নের মাধ্যমে আজকের যুগের এই অবস্থা। বিশেষ সামাজিক পরিস্থিতি, বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, কোনো ব্যক্তির নিরলস চেষ্টা বা অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপের মধ্য থেকেই কোনো আবিষ্কার বা উদ্ভাবনের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এই সব উদ্ভাবনের সুফল নিয়ন্ত্রণ করছে সমাজের প্রভাবশালী গোষ্ঠী। ফলে তারা হচ্ছে আরও প্রভাবশালী।
বর্তমানে কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি, কীটনাশক, রাসায়নিক সার, উন্নতমানের অধিক ফলনশীল বীজ এবং সেই সঙ্গে চাষাবাদের উন্নত পদ্ধতি যা স্বল্প জমিতে প্রচুর পরিমাণ উৎপাদন দিচ্ছে। এই বিষয়টা মানব জাতির জন্য একান্ত প্রয়োজন। কারণ জনসংখ্যার কারণে দিন যত যাচ্ছে ততই জমির সংকট হচ্ছে। তাই স্বল্প জমিতে প্রচুর পরিমাণ উৎপাদন না হলে মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হবে। বিজ্ঞানের জ্ঞান এতটাই কার্যকর যে মরুভূমির মতো বালুকাময় পরিবেশেও চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে। সম্ভব হচ্ছে অনুর্বর জমিকে উর্বর করে তোলা। সম্ভব হচ্ছে লোনা মাটিতে লোনা মাটির উপযোগী ফসল উৎপাদন করা। সম্ভব হচ্ছে একই সঙ্গে ফসল ও মাছের চাষ করা। পানিযুক্ত পরিবেশে ফসল চাষের সঙ্গে সঙ্গে সেই পানির ভেতরে আবার মাছের চাষও হচ্ছে। বন্যা ও খরা প্রতিরোধের জন্য ধান আবিষ্কার, পোকাপ্রতিরোধী বেগুন আবিষ্কার এসব কিছু সম্ভব হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ফলে। একইভাবে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আঠারো শতকের মধ্যভাগে শিল্প বিপ্লব হয়েছিল। বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এক অমূল্য রত্ন। প্রাচীনকালে শিল্পকারখানাগুলোতে মানুষ নিজ হাতে কাজ করলেও এখনকার শিল্পকারখানাগুলোতে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র কাজ করছে। ফলে কম শ্রমিক কম শ্রমে বেশি উৎপাদন করতে পারছে। শিল্প কারখানার সব যন্ত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অবদান।