সম্প্রতি হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রাজীব নূরসহ তিন সাংবাদিক। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়া এখন প্রায় সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সত্য প্রকাশিত হওয়ার মধ্যে লুকিয়ে থাকে অনেকেরই লাভ-ক্ষতির হিসাব। ফলে সেটি প্রকাশিত হওয়ার ভয়ে প্রথম আক্রমণটা সাংবাদিকের ওপরই হচ্ছে। এতে সফল হলে ভবিষ্যতে আর ওই সত্য প্রকাশের ঝুঁকি থাকে না। সে মানসিকতা থেকেই আক্রমণগুলো চলে। এমন পরিস্থিতির ভেতর রাজীব নূরের মতো অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা নির্মোহভাবে সত্যকে মানুষের কাছে তুলে ধরার সাহস দেখাচ্ছেন সেটিই আশার কথা। বানিয়াচংয়ে ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বাড়ি দখলের খবর সংগ্রহ করতে গিয়েই আক্রান্ত হন সাংবাদিকরা। বাড়িটি দখল করে আছেন ওয়াহেদ মিয়া। তিনি ক্ষমতাসীন দলের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি। তবে তার আরেকটি পরিচয় উন্মোচন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দাশ পার্টির যোদ্ধা ধন মিয়া। গণমাধ্যমকে তিনি অকপটে বলেন, ‘ওয়াহেদ একজন দখলদার। রামনাথ বিশ্বাসের বাড়িটি অনেকবার চেষ্টা করেও আমরা দখলমুক্ত করতে পারিনি। কিছুদিন পরপরই নিজের নামে নামজারি করে ফেলে ওয়াহেদ। কিন্তু আমরা সেটা বাতিল করি। ওয়াহেদের বড় ভাই আবু ছালেক এই এলাকার চিহ্নিত আলবদর। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে আছে ছালেক।’
ওয়াহেদ মিয়া জামায়াতে ইসলামী থেকে বিএনপি হয়ে আওয়ামী লীগে এসে ওয়ার্ডের নেতা হন। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু একজন চিহ্নিত আলবদরের ছোট ভাই কীভাবে বঙ্গবন্ধুর দলে ঢুকে গেলেন এবং কাদের ছত্রছায়ায় নেতা বনে গেলেন সে বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেননি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। ওয়াহেদ মিয়ার বড় ভাই একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। এখন ক্ষমতাসীন দলের ভেতর ঘাপটি মেরে থেকে তারই ছোট ভাই ওয়াহেদ মিয়া বাড়ি দখল ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে কি আলবদরের এজেন্ডাই বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছিলেন?