নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অর্থাৎ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যেই নিয়ে নিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে এ ইভিএম বিষয়টি বেশ গুরুত্ব পেয়েছিল বলা চলে। সংলাপে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর বেশির ভাগই ইভিএমের বিপক্ষে বলেছে। বড় একটা দল-বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তো সংলাপে অংশগ্রহণ না করলেও ইভিএমের বিরুদ্ধে সদা-সোচ্চার।
এমনকি দলটি ইভিএম ব্যবহারকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট চুরির ‘ষড়যন্ত্র’রূপে বিবেচনা করছে। ষড়যন্ত্র শব্দটি এখন রাজনীতির মাঠে খুব জোরেশোরে চাউর হচ্ছে-কেবল ষড়যন্ত্র আর ষড়যন্ত্র। আওয়ামী লীগ তো বিএনপি ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসতে চায় যেমন বলেই চলেছে, এর চেয়েও বেশি জোরে বলছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বিএনপি ইভিএমে ভোটের ষড়যন্ত্রকেই বড় করে দেখছে। সর্বত্র কেবল ষড়যন্ত্র-ভাবটা যেন এমনই।
কিন্তু এত ষড়যন্ত্র হলে দেশটা চলছে কীভাবে? আর সর্বত্র যদি কেবল ষড়যন্ত্র আর ষড়যন্ত্রই থেকে থাকে, তাহলে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা গোয়েন্দারা কি এসব ষড়যন্ত্রের খোলস বের করতে পারে না? তারা কি অদক্ষ? হ্যাঁ, অদক্ষতার প্রশ্ন এলে তো বলতেই হয়, অদক্ষতা রয়েছে। তা না হলে ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধু হত্যা বা ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনা আগেভাগে তারা জানতে পারল না কেন? যদি বলা হয়, তারা দক্ষ এবং আগেই জানত, তবে তো বলতে হয়, তাহলে তারা কি ‘যোগসাজশে’ ছিল? ষড়যন্ত্র নিয়ে এত গলাবাজি কিংবা কেবল ষড়যন্ত্র আর ষড়যন্ত্র শুনতে আমাদের আর ভালো লাগছে না। আমরা ষড়যন্ত্র চাই না, তারপরও ষড়যন্ত্র থেকে থাকলে এর উদ্ঘাটন এবং উচ্ছেদ চাই।