বর্তমান সরকারের টানা ১৩ বছরের শাসনে বদলে গেছে বাংলাদেশ। নানা মাত্রায়, নানা সূচকে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন ঘটেছে। সামাজিক, অর্থনৈতিক সব সূচকেই বাংলাদেশের সাফল্য বিস্ময়কর। গড় আয়, গড় আয়ু, জিডিপি—সবকিছুই বেড়েছে। ডলারের রিজার্ভ বেড়েছে। আর সামগ্রিকভাবে এই সাফল্যের স্বীকৃতও মিলেছে।
বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। এই সময়ে অবকাঠামো খাতে নাটকীয় উন্নতি হয়েছে। নিজেদের টাকায় বানানো পদ্মা সেতু তো এখন বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক হয়ে গেছে।
এছাড়া মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর নিচে টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বদলে দেবে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার চিত্র। গ্রামেগঞ্জে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্টে গোটা বাংলাদেশই এখন দারুণ এক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায়।
যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবনীয় উন্নতির সুফল পৌঁছে গেছে গ্রামেগঞ্জেও। অজপাড়াগাঁয়ে উৎপাদিত পণ্যও এখন দ্রুতই পৌঁছে যাচ্ছে ভোক্তার টেবিলে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পৌঁছে গেছে ঘরে ঘরে। এই সাফল্যে এখন ঘরে ঘরে সচ্ছলতা।
তবে এত উন্নয়নের পরও বৈষম্য কমেনি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বৈষম্য আরও বেড়েছে। করোনার ধাক্কায় নতুন করে অনেকে দরিদ্র হয়েছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে করোনা বা যুদ্ধেও কিছু মানুষের কিছু যায় আসে না।
দেশের অর্থনীতির সাথে পাল্লা দিয়ে কিছু মানুষের সম্পদ বেড়েছে। আমাদের চারপাশে এখন আঙুল ফুলে কলা গাছ হওয়া মানুষের ছড়াছড়ি। ব্যবসা-বাণিজ্য করে বড়লোক হওয়া এক কথা, আর স্রেফ লুটপাট আর দুর্নীতি করে অর্থশালী হওয়া আরেক বিষয়। বাংলাদেশে এখন লুটপাট করে বড়লোক হওয়া মানুষের সংখ্যাই বেশি।
উন্নয়নের সুফল যেমন ঘরে ঘরে পৌঁছেছে, দুর্নীতিও পৌঁছে গেছে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। এই সর্বগ্রাসী দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলে, বাংলাদেশের অগ্রগতি দ্রুততর হতে পারতো।