রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কাছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) পাওনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আট হাজার কোটি টাকার বেশি। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক চিঠির জবাবে এ কথা জানিয়েছে বেবিচক। দীর্ঘদিনের বকেয়া পাওনা নিয়ে রীতিমতো বিপাকে পড়েছে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটি। বেবিচকের কর্মকর্তারা বলছেন, বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বকেয়া পরিশোধ না করে উল্টো মওকুফের জন্য নানা ফন্দি করছে বিমান।
পাওনার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক যাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মূল বকেয়া দিতে বিমানের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু মূল বকেয়ার চেয়ে সারচার্জ অনেক বেশি, যা বিভ্রান্তিকর। তিনি বলেন, সারচার্জের বিষয়টি ঠিক করার জন্য সরকারকে বলেছি। সরকার যা ঠিক করে দেবে, আমরা তা মেনে নেব।’
বেবিচকের সূত্র জানিয়েছে, অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদক গত ১৯ জুলাই বেবিচকের কাছে চিঠি দেয়। এতে বিভিন্ন এয়ারলাইনসের কাছে বেবিচকের কত পাওনা, তা জানতে চাওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, পুঞ্জীভূত বকেয়ার কারণ এবং বকেয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফৌজদারি অপরাধ হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে দুদক। দুদকের এই চিঠির পর বেবিচক হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ আটটি বিমানবন্দরের কাছে বিভিন্ন এয়ারলাইনসের পাওনা কত, তা জানতে চায়।
বিমানবন্দরগুলো যে হিসাব দিয়েছে, তাতে দেখা গেছে, চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন এয়ারলাইনসের কাছে বেবিচকের মোট পাওনা ৮ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু বিমানের কাছেই পাওনা ৮ হাজার ৮০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
বিমান ছাড়া অন্য এয়ারলাইনসের মধ্যে রিজেন্ট এয়ারের কাছে ৩১৯ কোটি ৬ লাখ, ইউনাইটেড এয়ারের কাছে ২১০ কোটি ৭ লাখ এবং জিএমজি এয়ারলাইনসের কাছে ২০৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। তবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের কাছে কোনো বকেয়া নেই বলে জানিয়েছে বেবিচকের হিসাব বিভাগ।