রেলের উন্নয়নে গত ১৩ বছরে সরকারের খরচ হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা। হয়েছে নতুন রেলপথ, কেনা হচ্ছে বগি ও ইঞ্জিন। তারপরও ২০২১-২২ অর্থবছরে লোকসানের রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বিনিয়োগ ফেরত দূরে থাক, ট্রেন চালানোর খরচের অর্ধেকও তুলতে পারেনি।
গত অর্থবছরে রেলে সরকারের খরচ হয় ১৬ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে রেলপথ নির্মাণ ও বগি-ইঞ্জিন কেনায় বিনিয়োগ ১২ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা, যার বড় অংশই বিদেশি ঋণ। ট্রেন চালানোর খরচ তথা পরিচালন ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৭৬২ কোটি। বিপরীতে আয় ১ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। রেকর্ড ২ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা লোকসান। আয়ের লক্ষ্য ছিল ২ হাজার ৫২৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
চলতি অর্থবছরে ১৪ হাজার ৯২৮ কোটি বিনিয়োগসহ রেলে খরচ হবে ১৮ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা। ৩ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা পরিচালন ব্যয়ের বিপরীতে আয়ের লক্ষ্য ২ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা। তবে তা পূরণের লক্ষণ নেই। আয় বাড়াতে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পরিকল্পনা চাইলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করে রেল। যেন ভাড়া বাড়ানো আয় বৃদ্ধির একমাত্র উপায়।
রেলের উন্নয়নে উদারহস্ত সরকার: ২০০৯ সালে ক্ষমতায় ফিরে রেলে নজর দেয় আওয়ামী লীগ। ১৩টি বাজেটে রেলকে ১ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এর ৭২ হাজার কোটি টাকা উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ হয়েছে। বাকি ৩০ হাজার ২৮০ কোটি টাকা পরিচালন ব্যয়ের বিপরীতে আয় ১৩ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। শুধু ট্রেন চালিয়ে গচ্চা ১৬ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা।
লাগাতার লোকসান হলেও শেষ পাঁচ বছরে রেলের উন্নয়নে খরচ আরও বেড়েছে। এই সময়ে খরচ হয়েছে ৭৯ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ৬১ হাজার ৮২১ কোটি টাকা। বাকি ১৮ হাজার ৬৬ কোটি টাকা রেল চালাতে খরচ করে, বিপরীতে আয় হয়েছে ৬ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা।