বঙ্গোপসাগর এখন আগের চেয়েও অনিশ্চিত। এ সাগরে কোনোপ্রকার আধুনিক নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই নিয়মিত মাছ ধরতে যান বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীরা। এখানে নৌকাডুবে প্রাণহানি এখনো নিয়মিত ঘটনা। এসব সমস্যা কাটিয়ে ওঠার পথে রয়েছে অনেক বাধাও।
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে নার্গিস বেগমের সঙ্গে আমাদের যখন দেখা হয়, তিনি তখনো নির্বাক। আমাদের দিকে ফিরেও তাকালেন না, তার চোখের শূন্য দৃষ্টি জানালার বাইরে নিবদ্ধ।
দুই দিন আগে তার স্বামী হাফিজুল বাবনা (৩০) বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে আর ফেরেনি। স্বামীর অপেক্ষাতেই আছেন নার্গিস। সময়টা ২০১৫ সাল। ২৫ বছরের নার্গিস তখন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
স্বামীর জন্য এখনো অপেক্ষা করে আছেন নার্গিস বেগম।
তার সাত বছর বয়সী ছেলে কখনো বাবাকে দেখেনি। ২০১৫ সালে কচুয়া উপজেলার ধূপখালি ইউনিয়নে হাফিজুলের গ্রাম ভাসা'র ১৯ জন মানুষ সমুদ্রে প্রাণ হারিয়েছিল।
বাংলাদেশের উপকূলবর্তী জেলেগ্রামগুলোতে জীবন এমনই। এখানে স্ত্রী ও সন্তানেরা তাদের সারাটা জীবন স্বামী/বাবা সাগর থেকে ফিরে আসার অপেক্ষাতে কাটায়। তারা ঠিকমতো নিশ্চিত হতেও পারে না তাদের প্রিয়জন সমুদ্রে নিহত হয়েছে কিনা, কারণ বেশিরভাগক্ষেত্রেই কখনো কোনো মৃতদেহ পাওয়া যায় না।