বাংলাদেশে প্রাণিজ প্রোটিনের একটি প্রধান উৎস মাছ। নদী-নালা, খাল-বিল ও সাগরে বিভিন্ন ধরনের মাছ রয়েছে, যেগুলোকে উৎস, চর্বির পরিমাণ ও আঁশ অনুযায়ী শ্রেণিভুক্ত করা যায়। রুই, কাতলা, কই, পুঁটি ইত্যাদি স্বাদুপানির মাছ। রুপচাঁদা, লইট্টা, ভেটকি, লাক্ষা, ইলিশ নোনাপানির মাছ। আবার কম চর্বিযুক্ত মাছ যেমন শিং, মাগুর, টাকি এবং বেশি চর্বিযুক্ত মাছের মধ্যে রয়েছে পাঙাশ, চিতল, ভেটকি ও ইলিশ ইত্যাদি।
মাছে ১৪ থেকে ২২ শতাংশ প্রোটিন থাকে এবং এই প্রোটিন উচ্চ জৈবমূল্যের। উচ্চ জৈবমূল্যের প্রোটিনে দেহ গঠন ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষমতা বেশি থাকে। তাজা মাছের চেয়ে শুষ্ক বা শুঁটকি মাছে দুই-তিন গুণ বেশি প্রোটিন থাকে। এ ছাড়া অতি প্রয়োজনীয় অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড ইপিএ (ইকোসা পেন্টানয়িক অ্যাসিড) এবং ডিএইচএ (ডোকোসা হেক্সানয়িক অ্যাসিড) শুঁটকি মাছে পাওয়া যায়। তবে শুঁটকি তৈরির ক্ষেত্রে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ সংরক্ষণ পদ্ধতির ওপর এর পুষ্টিমূল্য অনেকাংশে নির্ভর করে। এ ছাড়া মাছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও জিংক রয়েছে। সামুদ্রিক মাছে আয়োডিন রয়েছে, যা গলগণ্ড, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী প্রতিরোধে সহায়ক।
বড় আকারের কিছু মাছে সম্পৃক্ত চর্বি বা স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, যেমন বড় পাঙাশ, চিতল ইত্যাদি। এসব মাছ রান্নার পর যদি হাঁড়িতে তেল জমে যায়, সেটি না খাওয়াই ভালো।
অন্যদিকে ইলিশ মাছ রান্না করলেও তেল বের হয়। তবে তা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। ইলিশ মাছের তেল অসম্পৃক্ত চর্বি বা আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক এবং রক্ত জমাটকরণের প্রবণতা কমাতেও সাহায্য করে। চিংড়িতে প্রচুর কোলেস্টেরল থাকে; সুতরাং বুঝেশুনে খাওয়া ভালো।