খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, টাকার প্রয়োজন হলে দূরের কাউকে জানানো হতো চিঠি লিখে। এরপর এল ফোন। সে যুগেও প্রয়োজনের কথা ফোনে জানালেও টাকা আসত ডাকে। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে মোবাইল ব্যাংকিং শুরু হলে রাতারাতি বদলে যায় দৃশ্যপট। টাকার জন্য অপেক্ষা কিংবা যাতায়াত খরচের ঝক্কিঝামেলা পোহানোর চেয়ে মুহূর্তেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হওয়া লেনদেন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দেশের মানুষের কাছে। ক্রমান্বয়ে মোবাইল ব্যাংকিং এখন দেশের মানুষের ভরসার জায়গায় পরিণত হয়েছে। ২০১০ সালে শুরু হওয়া মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশ দেশের প্রথম সফল স্টার্টআপ। এরপর একে একে আরো বেশকিছু প্রতিষ্ঠান উঠে আসে। স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগে গাড়ি থেকে শুরু করে গৃহস্থালি কাজের লোক খোঁজা—সবকিছুই এখন হাতের মুঠোয়। সম্ভাবনাময় এ খাতে দেশী-বিদেশী অনেক উদ্যোক্তাই এগিয়ে আসছেন। ২০২১ থেকে ২০২২ সালে তাই ১০ গুণ বেড়েছে স্টার্টআপ বিনিয়োগ। তবে এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ এখনো বেশ পিছিয়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেরিতে শুরু করার কারণেই তুলনামূলক কম এগিয়েছে দেশ। অবশ্য এ খাতে বৈপ্লবিক সাফল্য সময়ের ব্যাপার বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
লাইট ক্যাসেল, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য সূত্রে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, স্টার্টআপ বিনিয়োগে বাংলাদেশের ওপরে আছে এশিয়ার পাঁচটি দেশ। পেছনে আছে পাকিস্তান। এ সময়ে শীর্ষস্থানে থাকা সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ২০০ কোটি ডলার। এর পরই চীনের অবস্থান। ২০২১ থেকে ২০২২ সালে দেশটির বিনিয়োগ ছিল ১০ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। ৪ হাজার ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে ভারত আছে তৃতীয় স্থানে। এছাড়া ফিলিপাইনে ১০০ কোটি, ভিয়েতনামে ১০০ কোটি ও পাকিস্তানে স্টার্টআপ বিনিয়োগ হয়েছে ৩৪ কোটি ১০ লাখ ডলার। বাংলাদেশে স্টার্টআপ বিনিয়োগ হয়েছে ৪১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। যদিও বাংলাদেশে বিনিয়োগের হার সবচেয়ে বেশি, ৯৪০ শতাংশ। এ সময়ে পাকিস্তানে স্টার্টআপে বিনিয়োগ বেড়েছে ৪৩৫ শতাংশ, ভিয়েতনামে ৩৩০, ভারতে ২৬৫, ফিলিপাইনে ১৮০, সিঙ্গাপুরে ১৮০ ও চীনে ৪৯ শতাংশ।