বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে কিছু দিন হল একটি বেসরকারি ব্যাংকে শিক্ষানবীশ কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরি করছেন জেরিন আফরিন। বাবা-মা দু’জনেই অসুস্থ থাকায় তার পরিবারের মাসিক ওষুধের খরচ অন্তত ১২ হাজার টাকা।
সবকিছুর পাশাপাশি ওষুধের দাম বেড়ে যাওয়ায় পাঁচ বছর আগে অবসরে যাওয়া তার পিতার পক্ষে তা বহন করা কষ্টকর। এর মধ্যে এক ধাক্কায় ওষুধের দাম অনেক বেড়ে যাওয়া তার পরিবারের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাড়া মহল্লার ওষুধের দোকানেও কিছুক্ষণ দাঁড়ালে বেশি লাগে এমন কিছু ওষুধের অস্বাভাবিক দাম বাড়া নিয়ে ক্রেতাদের প্রশ্নে জর্জরিত হতে দেখা যায় বিক্রেতাদের। এক লাফে এতটা দর বাড়ানো নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায় তাদের।
ঢাকার ফার্মগেইটে গত সপ্তাহে ওষুধ কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, “বাচ্চার জন্য সিরাপ কিনতে এলাম। এই নাপা সিরাপটার দাম এখন ৩৫ টাকা। সবকিছুর দাম এভাবে বাড়লে কিভাবে কি?”
পাশের শিফা ফার্মার শিপলু নামের এক বিক্রেতা জানান, আগে নাপার একই পরিমাণ সিরাপের দাম ছিল ২০ টাকা। কিন্তু এটার দাম বেড়ে যে ৩৫ টাকা হয়েছে, তা অনেকেই জানে না।
“এতে অনেকে যেমন অবাক হয়, কেউ কেউ ঝামেলাও করে। তখন গায়ের দাম দেখাইতে হয়,” যোগ করেন তিনি।
প্যারাসিটামলের ৬০ মিলিলিটার সিরাপে দর বাড়ানোর হার ৭৫ শতাংশ।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ১৯টি জেনেরিকের ৫৩টি পদের ওষুধের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে। অনেকগুলোর দাম দ্বিগুণের বেশি বাড়ানো হয়েছে।
একেবারে এতটা দর বাড়ানো নিয়ে ক্রেতাদের যেমন অনেক প্রশ্ন; তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতির এক শিক্ষকও এমন দাম নির্ধারণের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
অপরদিকে ঔষধ প্রশাসন ও ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তারা কাঁচামাল ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘদিন এসব ওষুধের দাম না বাড়ানোকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরেন।