কেস এক.
মিতি। বয়স ১৫-১৬ বছর। উচ্চতা পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি। মাসিক অনিয়মিত।
মুখে ব্রণ, ঘাড়ে কালো দাগ। ওজন এর মধ্যে ৮০ ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত ওজন আর মুখের লোম গজানো নিয়ে। অবাঞ্ছিত লোম চিবুক, আপার লিপ, কানের সামনে ছাড়াও ইদানীং বুকে ও তলপেটেও দেখা যাচ্ছে।
কেস দুই.
মহুয়া। বয়স ২৮-২৯। বিয়ে হয়েছে চার বছর হলো। বাচ্চা হয় না। মাসিকের সমস্যা তো ছিল আগে থেকেই। নিয়মিত হতো না। তিন-চার মাস পর পর হতো। ওজনও বেশি। ইদানীং ঘাড়ে, গালে মেছতার মতো দাগও দেখা যাচ্ছে। বাচ্চা হয় না দেখে শ্বশুরবাড়িতে কথা শুনতে হয়।
কেস তিন.
তাসমিনা। বয়স ৩৫-৩৬। ব্যাংকার। ওজন একটু বেশি। মাসিক নিয়মিত হয় না। দু-তিন মাস পর পর হয়। মাসিক একদম শুরু থেকেই এমন। পর পর তিনটি বাচ্চা মিসক্যারেজ। বাচ্চা কনসিভ করতে সমস্যা হয় না। বাচ্চা কনসিভ করে, কিন্তু নষ্ট হয়ে যায়।
কেস চার.
হালিমা বেগম। বয়স ৪৪-৪৫ হবে। স্থূলকায়। ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন—সবই আছে। এসেছেন মাসিকের সমস্যা নিয়ে। যখন-তখন রক্ত যায়। নামাজ-রোজা করতে অসুবিধা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পাওয়া গেল এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার।
এতক্ষণ যতগুলো রোগীর কথা শুনলেন, তাঁদের প্রত্যেকের ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে। তাঁরা বিভিন্ন বয়সী। বয়সভেদে ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা নিয়ে এলেও তাঁরা সবাই কিন্তু একই রোগে আক্রান্ত। রোগটির নাম পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (পিসিওএস)। একটি নয়, একাধিক রোগের সামষ্টিক নাম এই পিসিওএস। এটি এমন একটি রোগ, কাউকে ছাড়ে না। সব বয়সী নারীদের সঙ্গেই তার শত্রুতা। শতকরা ১০ ভাগ নারী এই রোগে আক্রান্ত। ইনফার্টিলিটিতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে আরো বেশি, শতকরা ৩০ ভাগই এটির দখলে।