পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘাতের সময় ১৯৭৯ সালে স্নেহ কুমার চাকমা রাঙামাটির লংগদু উপজেলা থেকে একই জেলার বাঘাইছড়িতে পালিয়ে যান। এ সময় তাঁর বসতভূমি ও চাষের জমি দখল হয়ে যায়। পার্বত্য চুক্তি হলে ১৮ বছর পর ১৯৯৭ সালে তিনি নিজের এলাকায় ফেরেন। এসে দেখেন, বসতভূমি, চাষের জমি—সবই দখল হয়ে গেছে। অগত্যা আগের জমির পাশে খালি একটি জায়গায় বসবাস শুরু করেন।
লংগদু উপজেলার ঘনমোর মৌজার তিন একর জমি ফিরে পেতে স্নেহ কুমার ২০১৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনে আবেদন করেন। আট বছর ধরে সেই আবেদন পড়ে আছে।
শুধু স্নেহ কুমার নন। খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানের বাসিন্দাদের প্রায় সাড়ে ২২ হাজার আবেদন পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে পড়ে আছে। কারও আবেদনের নিষ্পত্তি হয়নি।
১৯৯৯ সালে খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন গঠিত হয়। এরপর রাঙামাটিতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ও বান্দরবানে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কমিশনের শাখা কার্যালয় খোলা হয়। দুটি শাখা কার্যালয় খোলা হলেও কমিশনে আবেদনের নিষ্পত্তি শুরুই হয়নি।
কমিশন সূত্র বলছে, কমিশন গঠনের ২৩ বছর পরও আইন প্রয়োগের বিধিমালা হয়নি। এ ছাড়া জনবলসংকটসহ নানা জটিলতায় কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। অতীতে দীর্ঘদিন ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি আইন সংশোধন নিয়ে জটিলতার কথাও বলছে কমিশন।
পার্বত্য তিন জেলায় জমি নিয়ে সমস্যার শিকড় গভীরে। সত্তর দশকের মাঝামাঝি থেকে প্রায় দুই যুগ ধরে সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) তথা শান্তিবাহিনীর সংঘাত চলেছে। সে সময় তিন পার্বত্য জেলার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অনেকে ভারতে শরণার্থী হন। অনেকে আবার অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুতে পরিণত হন।