পাকিস্তানে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা বিশ্বের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকির সতর্কবার্তা হিসাবে দেখছেন বিশেজ্ঞরা।
তারা বলছেন, শুধু গরিব দেশগুলোই নয়, এমন রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টি যে কোনো দেশের জন্যই ধ্বংস ডেকে আনতে পারে।
ভয়াবহ এই বন্যায় পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ চলে গেছে পানির নিচে। শুক্রবার দেশটির আরও ২০০০ হাজার মানুষকে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অর্ধেক ফসল ভেসে যাওয়ায় খাদ্য ঘাটতির বিষয়ে সতর্ক করেছেন পাকিস্তানের মন্ত্রীরা।
প্রলয়ঙ্করী এই বন্যার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব খোঁজার চেষ্টা করেছে বিবিসি।
সংবাদ সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে ভয়াবহ এই বিপর্যয়ের পেছনে মানবসৃষ্ট প্রভাব পরিষ্কার। দেশটি এক রকমের অবিচারের শিকার। যেখানে বিশ্ব থেকে গ্রিনহাউস গ্যাসের মাত্র ১ শতাংশের জন্য পাকিস্তান দায়ী, যেখানে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফল বেশিই ভোগ করতে হচ্ছে দেশটিকে।
পাকিস্তানের জলবায়ুমন্ত্রী শেরি রেহমান এই সপ্তাহে বলেছেন, “পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এই মুহূর্তে পানির নিচে রয়েছে। বন্যার পানি দেশের প্রতিটি কোণায় পৌঁছে গেছে। অতীতে যা দেখেছি তার সব কিছুকে ছাড়িয়ে গেছে।”
ভৌগোলিকভাবে পাকিস্তান পৃথিবীর এমন একটি অবস্থানে, যেখানে দুটি প্রধান আবহাওয়ার প্রভাবই দৃশ্যমান। দেশটিতে মার্চে তাপপ্রবাহ খরা নিয়ে আসে। আরেকটি হল মৌসুমী বৃষ্টি।
পাকিস্তানের জনসংখ্যার অধিকাংশেরই বাস সিন্ধু নদীর তীরে। ফলে বর্ষার সময়ে বৃষ্টিতে নদী ফুলে ওঠে এবং বন্যা ডেকে আনে।
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে তীব্র বর্ষার সংযোগ খুব সাধারণ। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বায়ু ও সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়িয়ে আরও বাষ্পীভব্ন ঘটায়। আর উষ্ণ বায়ু আরও আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে, যা বর্ষা মৌসুমের সাধারণ বৃষ্টিপাতের তুলনায় অনেক বেশি বৃষ্টি নিয়ে আসে।
বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ভারতীয় গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে গড় বৃষ্টিপাত বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই যে তা ঘটবে, তা ব্যাখ্যা করেছেন পটসডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চের আনজা কাটজেনবার্গার।