৯০ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ

কালের কণ্ঠ প্রকাশিত: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:৩৩

কোনো বিদ্যুৎ না নিয়েই গত ১১ বছরে সরকার বিদ্যুৎ কম্পানিগুলোকে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। এটি ক্যাপাসিটি চার্জ বা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতার ভাড়া নামে পরিচিত। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।


এই অর্থ দেশের বিদ্যুৎ খাতে ব্যয়ের বোঝা বাড়াচ্ছে। এই বোঝা হালকা করতে সরকারকে যেমন ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, তেমনি বিদ্যুতের দামও বাড়াতে হচ্ছে। এতে শেষ পর্যন্ত টাকাটা গ্রাহকদের পকেট থেকে বের হয়ে যাচ্ছে।


বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জানানো হয়, সরকারি-বেসরকারি  ৯০টি কেন্দ্রকে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ১৬ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। এই হিসাবে প্রতি মাসে গড়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ভাড়া দিতে হয়েছে এক হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা।


এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে এলএনজিভিত্তিক তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুতেও থাকছে ক্যাপাসিটি চার্জ।    


বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে সব বিদ্যুৎকেন্দ্র মিলিয়ে ২৫ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। কিন্তু এ পর্যন্ত দিনে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। কম্পানিগুলোর সঙ্গে সরকারের করা ক্রয় চুক্তি অনুযায়ী, সক্ষমতার পুরো বিদ্যুৎ উৎপাদন বা কেনা না হলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ভাড়া বাবদ নির্দিষ্ট হারে অর্থ (ক্যাপাসিটি চার্জ) পরিশোধ করতে হবে। এই ৯০ হাজার কোটি টাকা সেই অর্থ, যা কম্পানিগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই পেয়েছে।


জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের ধারণা ছিল, ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের অর্থনীতি যেভাবে এগোবে, তাতে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বাড়বে। কিন্তু বাস্তবে সেভাবে বিদ্যুিভত্তিক উৎপাদন বা শিল্প-কারখানা হয়নি। তাই এখন পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। তা না হলে, অতিরিক্ত দামের বিদ্যুতের কারণে শিল্পপণ্যের উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যাবে।   


জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম কালের কণ্ঠকে বলেন, তেলভিত্তিক কিছু কেন্দ্র আছে, যেগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে না, অথবা সারা বছরে অল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। সেগুলোকে শতকোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। এমন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।


ম. তামিম বলেন, মূলত বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা পূরণের জন্য কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র রিজার্ভ রাখতে হয়। এই কেন্দ্রগুলো যখন বসে থাকবে, তখন শুধু ক্যাপাসিটি চার্জ পাবে। তবে রিজার্ভে রাখার বিষয়টি হিসাব-নিকাশ করে রাখতে হবে, যাতে কোনোভাবেই অতিরিক্ত না হয়।


গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ক্যাপাসিটি চার্জ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, ক্যাপাসিটি চার্জ বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত প্রক্রিয়া। যদি কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে না রাখা হয়, তাহলে পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা ১০ হাজার মেগাওয়াট থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াটে উঠে গেলে সেই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ কে দেবে? পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ পাওয়ার জন্য বাকি সময় অলস বসে থাকার জন্য যে চার্জ দেওয়া হয় তা-ই ক্যাপাসিটি চার্জ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us