গত বছর নবায়নযোগ্য জ্বালানির রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন নতুন জ্বালানি সক্ষমতার বিষয়টি তুলে ধরার পাশাপাশি জ্বালানির রূপান্তর কার্যক্রম ঘিরে গতিশীলতার সুস্পষ্ট বার্তা দেয়। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো এ ইঙ্গিতও দিচ্ছে, যথেষ্ট সক্ষম ও শক্তিশালী বিকল্প উৎস তৈরি না করা পর্যন্ত বর্তমান জ্বালানি ব্যবস্থাকে বিচ্যুত করাটা অর্থনীতি ও জলবায়ু উভয় অগ্রগতিকে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে এবং আমরা সবার জন্য একটি ন্যায়সংগত ও ন্যায্য পরিবর্তন নিশ্চিত করতে পারি কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রাখছে।
অর্থনীতি ও জলবায়ুবিষয়ক অগ্রগতি অর্জনে জ্বালানির সফল রূপান্তর জরুরি। তবে তা অবশ্যই বিজ্ঞানসম্মত, অর্থনৈতিক এবং প্রকৌশল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে হতে হবে। পাশাপাশি বিবিধ দ্বিধা ও চ্যালেঞ্জগুলোকে আমলে নিয়ে ব্যবহারিক সমাধানের দিকেও জোর দিতে হবে। সেজন্য আমাদের প্রয়োজন অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি, যা সমাজের সব ক্ষেত্রের অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লাগাবে, আর অবশ্যই জ্বালানি খাতকে বাদ দেবে না।
কভিড-১৯ মহামারী-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার ফলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকট শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ জ্বালানি বাজারকে আরো সংকটের দিকে ঠেলে দেয়। রাষ্ট্রগুলো এখন তাদের নিকটবর্তী জরুরি কৌশলগত চাহিদার পুনরায় মূল্যায়ন করতে বাধ্য হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকারগুলোর জন্য পরিষ্কার বার্তাটি হচ্ছে, পর্যাপ্ত বিকল্প উৎস তৈরি ব্যতীত তাড়াহুড়ো করে হাইড্রোকার্বন থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তটি মোটেও ভালো কিছু হবে না, বরং যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়া এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তা জ্বালানি নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট এবং জ্বালানির রূপান্তর কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে। এখানে যা প্রয়োজন তা হচ্ছে বাস্তবসম্মত নতুন কৌশল গ্রহণ—যা হবে ব্যবহারিক, প্রবৃদ্ধির পক্ষে ও জলবায়ু সমর্থক।