বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ওপরেই সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল বাংলাদেশ। এর মধ্যে দেশে আমদানি পণ্যের সবচেয়ে বড় উৎস হলো চীন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র হয়ে উঠেছে বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের দিক থেকে বড় সম্পর্ক রয়েছে ভারতের সঙ্গেও। দেশ তিনটির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে সম্পর্ক বেশি দৃশ্যমান হলেও চীন ও ভারতের ক্ষেত্রে তা দেখা যায় প্রধানত কানেক্টিভিটি, অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে।
বাংলাদেশে এখন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারত—এ তিন দেশেরই সফট পাওয়ারের (বাণিজ্যিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রভাবিত করার ক্ষমতা) প্রভাব দিনে দিনে বাড়ছে। প্রতি বছর প্রচুরসংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য দেশ তিনটিতে পাড়ি দিচ্ছেন। শক্তিশালী হয়ে উঠছে সাংস্কৃতিক যোগাযোগও। যদিও আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ভূরাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য করে চলা বাংলাদেশের জন্য জটিল হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন অনেক পর্যবেক্ষক।
তাদের ভাষ্যমতে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈরথ এখন শুধু ভূরাজনীতিতে সীমাবদ্ধ নেই। বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক পরাশক্তি হয়ে ওঠার প্রতিযোগিতায়ও লিপ্ত রয়েছে দেশ দুটি। এর মধ্যেই তাইওয়ান ইস্যুকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বৈরিতার মাত্রা দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। দুটি দেশই বিশ্বের অন্যান্য দেশকে নিজ নিজ প্রভাব বলয়ে নিয়ে আসতে বদ্ধপরিকর। আবার ভারতের সঙ্গেও চীনের বৈরিতা মারাত্মক আকার নিয়েছে। গত পাঁচ বছরে অন্তত দুইবার যুদ্ধ শুরুর পরিস্থিতিতে চলে গিয়েছিল দেশ দুটি। এমন পরিস্থিতিতে তিন দেশের সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করা যেকোনো দেশের জন্যই মুশকিল। তবে এখন পর্যন্ত এদিক থেকে অনেকটাই উতরে গিয়েছে বাংলাদেশ।