ছাত্রলীগের ছায়া প্রশাসন–মন্ত্রিপাড়া ও নব্য জমিদারিবিলাস

প্রথম আলো মনোজ দে প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট ২০২২, ১৭:৫৯

রুমে আটকে পেটাতে পেটাতে এক শিক্ষার্থীর কানের পর্দা ফাটিয়ে ফেলা হয়েছে। আরেক শিক্ষার্থী মুঠোফোন মেরামত করে নিজের পড়াশোনার খরচ জোগান। চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা না দিতে পারায় তাঁকে রুমে ডেকে এনে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে কেড়ে নেওয়া হয়েছে টাকা।


দুটি ঘটনাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের। ‘কোন বাপে সিট দেয়’ বলে হুমকি দেওয়ার ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের জেরে এক শিক্ষার্থীকে ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। হুমকি দেওয়া হয়েছে, বিবস্ত্র করে ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।


এটি ইডেন মহিলা কলেজের ঘটনা, যেখানে ‘ছাত্রলীগই সব, চোখ বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ’। প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতনের শিকার হলে শঙ্কিত অভিভাবকদের নিয়ে সহকারী প্রক্টর হলে গেলে তাঁদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। খবর সংগ্রহে গেলে মারধর করা হয় সাংবাদিকদের।


ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সহকারী প্রক্টরকেও মারতে উদ্যত হলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এটি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জহুরুল হক হলের ছাদে বিয়ার খেয়ে উচ্চ স্বরে গান গাওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের বাগ্‌বিতণ্ডা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে পরিণত হয়। শেষে লাঠিসোঁটা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়ালে পুরো হলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।


গণমাধ্যমে গত কয়েক দিনের এ ধরনের ভয়াবহ সংবাদগুলো জোড়া দিলে কারও বুঝতে অসুবিধা হয় না শিক্ষাঙ্গনে কতটা ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আবাসিক হলগুলোয় ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, সেটাকে নব্য জমিদারতন্ত্র না বলে উপায় নেই। কয়েক প্রজন্ম আগেও জমিদারেরা আর তাঁদের নায়েব, পাইক, পেয়াদারা মিলে বাংলার কৃষক- প্রজাদের ওপর যখন-তখন নিপীড়নের খড়্গ নামিয়ে দিতেন। কথায় কথায় কর-খাজনা আরোপ করা হতো। না দিতে পারলে চলত অকথ্য নির্যাতন। নিজেদের জমিদারিতে জমিদারের কথাই শেষ আইন। আবার অভিজাত্যের বলে প্রজাদের কাছ থেকে তৈরি করা হতো দুস্তর ব্যবধানের দেয়াল। জমিদারের বাড়ির সামনে জুতা পায়ে দিয়ে কিংবা ছাতা মাথায় দিয়ে প্রজারা কেউ যেতে পারতেন না।


২৮ আগস্ট প্রথম আলোর শিরোনাম ছিল ‘হলে “ছায়া প্রশাসন” চালায় ছাত্রলীগ’। লেখাটিতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩টি হলের বেশির ভাগ কক্ষের নিয়ন্ত্রণ ছাত্রলীগের হাতে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাতটি হলের ছয়টিই নিয়ন্ত্রণ করেন ছাত্রলীগের ছয় নেতা। হলের নিয়মকানুন-আইন তাঁরাই তৈরি করেন, বিচারের ব্যবস্থাও করেন। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের গণরুমের মাধ্যমে হলে তোলা হয়।


এরপর ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে নিয়মিত যাওয়া, আনুগত্যসহ অন্যান্য পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দও তাঁরাই করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাধ্যক্ষ হওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা রয়েছে। কেননা প্রাধ্যক্ষ পদে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকেরা একটা করে বাংলোয় থাকার সুযোগ পান। আবাসিক শিক্ষকেরাও বেশ কম ভাড়ায় আকর্ষণীয় বাসা পান। আছে বিশেষ ভাতাও। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দেখভালের জন্য এসব সুবিধা দেওয়া হলেও সেই কাজই তাঁরা করেন না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us