ছোটদের জন্য কেন যে লেখা দরকার সেটা বলা বরং সোজা, লেখাটা কেমন হবে সেটা বলার চেয়ে। ছোটদের যত্ন নেওয়া চাই। শৈশব তো বারবার আসে না, একবারই আসে এবং বাকি জীবনের জন্য ভিতটা তৈরি করে দেয়। সকাল বেলাটাই ঠিক করে দেয় বাকি দিনটা কেমন যাবে। ব্যতিক্রম ঘটে; তবে ব্যতিক্রম তো নিয়মেরই প্রমাণ। আমাদের সমাজে শৈশবের কালটা যে তেমন যত্ন পায় না সেটা সহজেই টের পাই। অনাদর, অবহেলা, নির্যাতন সবকিছুই ঘটে। অতি যত্নও অনেক সময় যন্ত্রণার কারণ হয়ে দেখা দেয়।
শিশু চায় আনন্দ। আনন্দ না পেলে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয় সারাজীবন তা থেকে তার মুক্তি নেই। আর শিশু আনন্দ ভালোভাবে পায় সৃষ্টিশীলতার ভেতর দিয়ে। সব শিশুই সৃষ্টি করে। নিজের জন্য সে একটা জগৎ গড়ে তোলে। সে দেখে, শোনে, ভাবে, এবং বুঝতে চেষ্টা করে। কাজে লাগায় নিজের কল্পনা ও বুদ্ধিকে। শিশু সে হাসে, কাঁদে, ভয় পায়; শৈশবের অনেক ঘটনাই স্মৃতি হয়ে, প্রভাব হয়ে, জীবনভর তার সঙ্গে থাকে। তাকে সজীব রাখে, কিংবা রাখে না; পথ দেখায়, কিংবা দেখায় না। আনন্দ পেলে সহজ হয় সজীব থাকার কাজটাতে। বাংলাদেশে আমাদের শিশুরা নিরাপদে নেই, তাদের শৈশব নানাভাবে বিপন্ন। আনন্দই বলি আর সৃষ্টিশীলতাই বলি তা খুবই উৎসাহিত হয় শিশু যদি বইপত্র পায় হাতের কাছে। পড়তে পারে মনের সুখে। শুধু পাঠ্যবই নয়, চাই শখের বইও। আর সে জন্যই তো শিশুর জন্য লেখা দরকার। ভালোভাবে লেখা, যত্ন করে লেখা, আনন্দের সঙ্গে লেখা। তাতে শিশুর মঙ্গল, সমাজেরও মঙ্গল।