চিকিৎসাসেবায় শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর সরকার

সমকাল প্রকাশিত: ২৯ আগস্ট ২০২২, ১০:২৮

সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে সেবার মান বাড়াতে ও শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার। দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও বাণিজ্য এবং ভোগান্তি দূর করতে অবৈধ হাসপাতাল বন্ধে অভিযানে নামছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে সুচিকিৎসা নিশ্চিতে বেসরকারি হাসপাতালগুলো তিন শ্রেণিতে বিভাজন করা হচ্ছে। উন্নত প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে চিকিৎসকদেরও। এ ছাড়া অবৈধ হাসপাতালে নিবন্ধিত ডাক্তার চিকিৎসাসেবা দিতে পারবেন না। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সেবা ও পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণের প্রক্রিয়াও চলছে। এ খাতে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা দূর করতেই এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।


স্বাস্থ্য খাত বিশেষজ্ঞ ও সরকারের নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, উদ্যোগগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন হলে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। কমবে রোগী হয়রানি ও ভোগান্তি।


এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহামেদুল কবীর সমকালকে বলেন, প্রথমে নিবন্ধিত হাসপাতালের তালিকা তৈরি করা হবে। এরপর তাদের সেবার মান বৃদ্ধিতে কাজ করা হবে। যারা নিবন্ধনের আবেদন করেনি বা ক্রটিপূর্ণ আবেদন জমা দিয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করে দেওয়া হবে। নিবন্ধিত হাসপাতালগুলোর সেবার মানোন্নয়নের জন্য তিন ক্যাটাগরিতে বিভাজন করা হবে। এ, বি, সি- এই তিন ক্যাটাগরির তালিকা তৈরি করে হাসপাতালগুলোয় টানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। যাতে জনগণ জেনে চিকিৎসা নিতে পারে। এ ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল পরিচালনার জন্য আলাদা একটি মহাপরিচালকের পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলমান।


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, অবৈধ ক্লিনিকে নিবন্ধিত চিকিৎসক যদি সেবাকার্য পরিচালনা করেন তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালে সেবা ও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। যে চার্জ নির্ধারণ করে দেওয়া হবে, সেগুলো সংশ্লিষ্ট ক্লিনিক, হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রদর্শন করতে হবে। সেখানে প্রতিটি সেবার মূল্য সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে। এগুলো একটা বোর্ডে টানানো থাকবে, যা সরকারি হাসপাতালে রয়েছে।


অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ১৯৮২ সাল থেকে এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিবন্ধন নিয়ে সারাদেশে ১৮ হাজারের কিছু বেশি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক, ব্লাডব্যাংক পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্তমানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে তালিকা আছে ১৫ হাজার। গত তিন মাসের অভিযানে বন্ধ করা হয়েছে ১ হাজার ৬৪২টি। ২ হাজার প্রতিষ্ঠান নতুন করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। লাইসেন্স নবায়ন করা হয়েছে প্রায় তিন হাজার প্রতিষ্ঠানের। নতুন লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৪৮৯টি। এটা থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকার মতো। তবে যেসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করেছে, প্রতি বছর তাদের লাইসেন্স নবায়ন করার কথা। কিন্তু বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান তা মানছে না। নিবন্ধন হালনাগাদ করতে (লাইসেন্স নবায়ন) চাপ দিলেও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক তোয়াক্কা করে না। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নবায়ন ছাড়াই রমরমা বাণিজ্য চালাচ্ছে কয়েক হাজার হাসপাতাল ও ক্লিনিক। এবার এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার।


অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধে গতকাল রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেশের সব সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সব বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) এবং সিভিল সার্জনদের নিজ নিজ জেলায় অনিবন্ধিত, অবৈধ ও নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিচালিত সেবার মান খারাপ এমন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিয়ে প্রয়োজনে সিলগালা করে মহাপরিচালককে অবগত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তিন মাস পর আজ সোমবার থেকে আবার অভিযানে নামছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই অভিযান চলবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। ৯৬ ঘণ্টা অভিযানের পর শুক্রবার ও শনিবার আলোচনা করে সময় বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us