দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে গত জুন পর্যন্ত সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় পৌনে তিন লাখ কোটি টাকা। এ টাকা সংস্থাগুলোর উন্নয়নে বা অন্য প্রয়োজনে সরকারি খাতে যাওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো এই টাকা খাটাচ্ছে।
বিপুল এ আমানতের ৫৯.৬১ শতাংশ রয়েছে ঢাকার বিভিন্ন ব্যাংকে।
আর ঢাকার বাইরে আছে ৪০.৩৯ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি আমানত রাখা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে। বাংলাদেশ ব্যাংক গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ব্যাংকগুলোর আমানত নিয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠায়। তাতে এই তথ্য উঠে এসেছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, এ টাকাগুলো সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সাময়িক সময়ের জন্য ব্যাংকে রেখেছে। প্রয়োজন হলে প্রতিষ্ঠানগুলো কলমানি মার্কেট থেকে তুলে নেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশাল এ টাকা সংস্থাগুলোর উন্নয়নে বা অন্য প্রয়োজনে সরকারি খাতে যাওয়ার কথা। এ টাকা ব্যাংকে রাখার কারণে সংস্থাগুলো কিছু সুদ হয়তো পাচ্ছে। তাতে তাদের নিজেদের ছাড়া অন্য কারো উপকার হচ্ছে না।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকগুলোতে সরকার, বিভিন্ন সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বীমা কম্পানি ও পাবলিক পেনশন ফান্ড ইত্যাদির আমানত রয়েছে। গত জুন শেষে এসব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই লাখ ৭৬ হাজার ১৬৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ঢাকায় রয়েছে এক লাখ ৬৪ হাজার ৬২৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। ঢাকার বাইরে রয়েছে এক লাখ ১১ হাজার ৫৪৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশাল এ আমাতের বেশির ভাগই রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকে। এর পরিমাণ এক লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা। এটি মোট আমানতের ৬০.৪১ শতাংশ। ৪১টি বেসরকারি ব্যাংকে রয়েছে ৮৭ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা, যা মোট আমানতের ৩১.৬৮ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত তিনটি বিশেষায়িত ব্যাংকে রয়েছে ১৭ হাজার ৫১২ কোটি টাকা, যা মোট আমানতের ৬.৩৪ শতাংশ। এ ছাড়া বাংলাদেশে কার্যক্রম চালানো ৯টি বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকে রয়েছে চার হাজার ৩২৮ কোটি টাকা।