উন্নয়নের নামে প্রাণ-প্রকৃতি-সম্পদ, জনস্বাস্থ্য-জনজীবন ও জীবিকার বিপরীতে মুনাফা-অন্ধ তত্পরতায় বিশ্বের বাস্তুসংস্থান, নদী-সমুদ্র-জলবায়ু সর্বোপরি মানুষ আক্রান্ত। তথাকথিত উন্নয়নের এ প্রাণবিনাশী মুনাফালোভী চরিত্রের কারণে বিশ্ব এখন জলবায়ু পরিবর্তন, অতিমারীসহ নানা বিপর্যয়ের শিকার। এ ধারায় বিশ্ব চলতে থাকলে সামনে আরো ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে, বাংলাদেশের জন্য বিপদ হবে আরো বেশি।
তাই যেসব প্রকল্প প্রাণ-প্রকৃতি, জনস্বাস্থ্য, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং জননিরাপত্তা বিপন্ন করে সেগুলো প্রত্যাখ্যান করে মুনাফার বদলে মানুষকে গুরুত্ব দেয়ার দাবি এ শতকে বিশ্বজুড়ে জোরদার হচ্ছে। ফুলবাড়ীসহ ছয় থানার মানুষের আন্দোলন এ দাবিতেই ২০০৬ সালে গণঅভ্যুত্থান তৈরি করেছিল, আর বুকের রক্তে, সংগ্রামে ১৬ বছর ধরে প্রতিরোধ জাগ্রত রেখেছে। মাত্র ৬ শতাংশ রয়্যালটি দেয়ার বিনিময়ে এই কয়লা খনির দখল নিতে চেয়েছিল নবগঠিত ভুইফোঁড় বিদেশী কোম্পানি, ধ্বংসযজ্ঞ করে সে কয়লা বিদেশে পাচারের ব্যবস্থা করতে হতো সেই ৬ শতাংশ থেকেই।
এ প্রকল্পের পুরো প্রক্রিয়া আইনগত দিক থেকে ছিল অবৈধ, ছিল পুরোপুরি অস্বচ্ছ। এটি অগ্রসর হতে যাচ্ছিল প্রতারণা ও জোর জবরদস্তির ওপর ভর করে। এ প্রকল্পের পক্ষে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অর্থ সংস্থানকারী প্রতিষ্ঠান, দেশী ব্যবসায়ী, কনসালট্যান্ট সক্রিয় ছিল। আন্দোলনের কর্মসূচি-লক্ষ্য স্পষ্ট ও গতিশীল হওয়ার কারণে এবং আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা সৃষ্টির কারণে অন্য কোনো বিপরীত ধারা এখানে ভাঙন ধরাতে পারেনি। ‘উন্নয়নের’ মিথ্যাচারে মানুষ কাবু হয়নি। সর্বব্যাপী ঐক্য ক্রমেই সংহত হয়েছে।