ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু এবং এর অতীত প্রসঙ্গ নিয়ে কয়েক দিন অল্প কিছু কথা লিখেছি। আজকে লেখার চেষ্টা করছি আমাদের সময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেমন ছিল, তা নিয়ে। ১৯৭৬ সালটা সারা দেশের জন্য একটা বিশেষ আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক সন্ধিক্ষণের সময়। মাত্র কয়েক মাস আগে তখন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় সপরিবারে তার ঢাকার ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ রোডের নিজ বাড়িতেই।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় এবং সমাজ জীবনে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালের দিনটা কিন্তু নানাভাবেই গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক এক সময়। আমরা তখন মাত্র ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার্থী ছিলাম। পরীক্ষা বন্ধ হয়েও যায় কিছুদিনের জন্য এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কারণে। স্বাধীনতা-উত্তর সময় বাংলাদেশের জন্য এটাই প্রথম ‘ন্যাশনাল ক্রাইসিস’ ছিল। এ দিনটা বদলে দেয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা-উত্তর আমাদের সমাজ চিন্তা, রাজনীতি এবং অর্থনীতিকে, এমনকি আমাদের স্বাধীনতার ভিত্তিকেও। জাতীয় জীবনের এমনই একটা ক্রান্তি লগ্নেই আমরা দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশ করি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশ করার একটা গভীর আনন্দ তখন ছিল, তেমনি ছিল একটা আশঙ্কা, কী জানি কী হয়—সেটা নিয়েও।
মনে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল তখন আমরা কয়েক বন্ধু ছিলাম আমাদের ‘সিনেক্লাব’ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার জন্য যে একটা ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে, সেটার গুরুত্বের কথা মাথায় ছিল না। একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে দেখি আমার জন্য দুটো বিভাগে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ আছে। এর একটা লোক প্রশাসন বিভাগ। অন্যটা সমাজবিজ্ঞান।