মানুষের অবস্থা খারাপ, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু যাঁরা উচ্চবিত্ত বা উচ্চমধ্যবিত্ত, তাঁরা ছাড়া সব মানুষই কষ্টে রয়েছে বলে আমার ধারণা। বিশেষ করে যাঁরা নির্দিষ্ট আয়ের (ফিক্সড ইনকাম গ্রুপ), অথবা যাঁরা অবসরে রয়েছেন, তাঁরা খুব সংকটে রয়েছেন। সংসারের ব্যয় কাটছাঁট করতে করতে অবস্থা অনেকটা এমন যে জামা কাটতে কাটতে দেখা যাবে আর কিছুই নেই।
সরকার কিছু গরিব বা নিম্নবিত্ত মানুষকে সহায়তার চেষ্টা করছে। এক কোটি পরিবারকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে কয়েকটি পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে দিচ্ছে। কিন্তু সার্বিক মূল্য পরিস্থিতি নাজুক।
করোনার কারণে অনেক মানুষের আয় কমেছে। যদিও সার্বিকভাবে অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। গতি সঞ্চার কিছু হয়েছে। তারপরও মানুষের আয় এখনো আগের পর্যায়ে পৌঁছায়নি।
আমার নিজের আয়ের উৎস উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ভবনের ভাড়া ও সঞ্চয়পত্রের মুনাফা। আমি দেখছি, ভাড়া নিতে মানুষ আসছে। তবে করোনাকালের আগের হারে তাঁরা ভাড়া দিতে পারছেন না। সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকেও মানুষের আয় কমেছে।
সরকার গত বছরের নভেম্বরের দিকে একবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়াল। তখন থেকে কিন্তু মূল্যস্ফীতিটা শুরু হলো। তখন পরিবহনভাড়া এক দফা বেড়েছিল। এ মাসে আবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো।
সরকার জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির একচেটিয়া ব্যবসা করে। কেন এই পণ্যগুলোর ব্যবসা সরকার করে? কারণ হলো, এসব পণ্যকে কৌশলগত পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সরকার এসব পণ্যের ব্যবসা করে, কারণ—অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য পণ্যগুলোর সরবরাহ পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা দরকার। এবং দাম সাশ্রয়ী রাখা জরুরি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সরকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা বা মানুষকে স্বস্তির মধ্যে জীবনযাপনের সুযোগ দেওয়ার জন্য এ ব্যবসা করছে না।
অতীতে আমরা দেখেছি, সরকার জ্বালানি তেল অনেক ভর্তুকি দিয়ে বিক্রি করেছে। ২০০৮ ও ২০০৯ সালে যখন তেলের দাম অনেক বেশি ছিল, তখন সরকার ভর্তুকি দিয়েছে। ২০১৪ সালের দিকে যখন জ্বালানি তেলের দাম কমে গেল, সরকার তখন দাম কিছুটা কমিয়ে দিল। বলল, দাম যদি আরও কমে তারাও কমাবে। কিন্তু এর পরে আর দাম কমায়নি।