রফতানি আয় নেই, এমন ব্যবসায়ীরাও দেদার ঋণ নিয়েছেন বিদেশী উৎস থেকে। কম সুদের প্রলোভনে নেয়া এ ঋণ এখন দেশের অনেক ব্যবসায়ীরই গলার ফাঁস হয়ে দেখা দিয়েছে। আবার ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার দায় বর্তাচ্ছে তহবিল জোগানদাতা ব্যাংকের ঘাড়ে। দেশের অনেক ব্যাংকই বিদেশী ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে খেলাপি হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ডলারের সংকট আর টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়নের প্রভাবে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, দেশের বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, গ্যাস ও জ্বালানি তেল আমদানিতে বিদেশী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ বিলিয়ন বা ৪০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে শুধু বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোই ৩৭৬ কোটি ডলারের দীর্ঘমেয়াদি বিদেশী ঋণ নিয়েছে। বিদেশী উৎস থেকে ঋণ নিলেও দেশের কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রেরই রফতানি আয় নেই। এ কারণে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে গিয়ে বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর বিপদ বাড়ছে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বলেন, সরকার বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো থেকে কেনা বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে পারছে না। এ কারণে বড় একটি বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির পক্ষ থেকে বিদেশী ঋণের কিস্তি পরিশোধ করে দেয়ার জন্য আমাদের চাপ দিচ্ছে। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি ডলার কিনতে চাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত দরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত দর অনুযায়ী বর্তমানে প্রতি ডলারের দাম ৯৫ টাকা। অথচ এ দামে আমরা বাজার থেকে ডলার কিনতে পারছি না। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকও বেসরকারি খাতের কোম্পানির জন্য ডলার সরবরাহ করতে রাজি নয়। এ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ কোম্পানিটির বিপদের পাশাপাশি ঋণ জোগানদাতা ব্যাংক হিসাবে আমরাও খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছি।