‘আয়নাঘর’–এর সত্য কি জানা যাবে

প্রথম আলো মারুফ মল্লিক প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২২, ১০:১৭

স্কটিশ নির্মাতা কেভিন ম্যাকডোনাল্ডের দ্য মৌরিতানিয়ান সিনেমাটি অনেকেই দেখেছেন নিশ্চয়ই। ২০২১ সালে মুক্তি পাওয়া এ সিনেমায় দেখানো হয়েছে, নায়ক মোহাম্মাদু উলাদা সিলাহাই জঙ্গি সম্পৃক্ততার সন্দেহে মার্কিন কারাগার গুয়ানতানামো বেতে ১৪ বছর জেল খাটেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার ২ মাস পর ২০০১ সালের নভেম্বরে মৌরিতানিয়া থেকে গুম হয়েছিলেন স্লাহি। এক বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে পরিবারের সদস্যদের সামনেই মৌরিতানিয়ার পুলিশ সিলাহাইকে তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু এরপর তাঁকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে ফরাসি আইনজীবী এমানুয়েলের অনুরোধে মার্কিন আইনজীবী ন্যান্সি হল্যান্ডার সিলাহাইকে গুয়ানতানামো বেতে খুঁজে বের করেন।


অনেকটা সিলাহাইয়ের মতোই ঘটনার শিকার হয়েছেন গাজীপুরের শেখ মো. সেলিম। ২০১৬ সালের মে মাসে দিনের আলোতেই সেলিমকে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু এরপর আর তাঁর কোনো হদিস পায়নি পরিবার। কয়েক মাস পর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে সেলিমকে আটক দেখায়। এরপর সেলিম জেল থেকে বেরিয়ে মালয়েশিয়ায় ফিরে যান। উল্লেখ্য, দেশে বিয়ে করতে এসে গুম হয়েছিলেন সেলিম।


সম্প্রতি নেত্র নিউজ–এর প্রকাশিত এক ভিডিও প্রতিবেদনে শেখ মো. সেলিম গুম হওয়ার লোমহর্ষক বিবরণ দিয়েছেন। সেলিমের সঙ্গে ছিলেন দুবার গুম হওয়া সাবেক সামরিক কর্মকর্তা হাসিনুর রহমান। দুজনই অভিযোগ করেছেন, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার এক গোপন আস্তানায় তাঁদের আটকে রাখা হয়েছিল। এই গোপন আস্তানার নাম ‘আয়নাঘর’। আটক করে নিয়ে যাওয়া ও আটক-পরবর্তীকালে যে নির্যাতনের বিবরণ দুজন দিয়েছে, তা যেন বাংলাদেশের গুয়ানতানামো বে বা আবু গারিব কারাগার।


প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরপরই নানামুখী আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ সমালোচনা করে বলেছেন, হঠাৎ কী মনে করে এই দুজন মুখ খুললেন। এর পেছনে উদ্দেশ্যই-বা কী রয়েছে। তবে নানা আলোচনা ও সমালোচনার পরও বলতে হচ্ছে, এক যুগ ধরে চলা গুম নিয়ে নানা সন্দেহ, অভিযোগ ও জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটাতে প্রতিবেদনটি সহায়তা করতে পারে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসাবমতে, ২০০৯ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬০৫ জন গুম হয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ১০ বছর ধরে অজ্ঞাত স্থানে আটক করে রাখা ৮৬ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে। গুমের তালিকায় বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মী ও অরাজনৈতিক মানুষও রয়েছেন। গুম অবস্থা থেকে সেলিমের মতো যাঁরা ফিরে এসেছেন, তাঁদের অনেককেই জঙ্গি হিসেবে আটক দেখানো হয়েছে। তবে বেশ কয়েকজনকে আটক দেখানো না হলেও মুক্তজীবনে ফিরে আসার পর আর মুখ খোলেননি। এমনকি তাঁদের কোনো কিছু মনে পড়ছে না বলেও পরবর্তীকালে জানিয়েছিলেন। এ তালিকায় বুদ্ধিজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকও রয়েছেন।


কিন্তু এই প্রথম কেউ গুমের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বললেন এবং নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন। গুমজীবনের বর্ণনা দিতে গিয়ে মো. সেলিম জানিয়েছেন, গোপন বন্দীশালার দেয়ালে অনেক মানুষের বিভিন্ন তথ্যসংবলিত বার্তা তিনি দেখতে পেয়েছেন। অনেকেই ফোন নম্বর লিখে রেখেছিলেন। সেলিমের পূর্ববর্তী বন্দীরা আকুতি জানিয়েছেন তাঁদের আটকাবস্থার তথ্য বাড়িতে জানাতে।


দ্য মৌরিতানিয়ান-এর নায়ক সিলাহাই গুয়ানতানামো বে থেকে বেরিয়ে বিভীষিকাময় সেই নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে আত্মজীবনী গুয়ানতানামো ডায়েরি লিখেছিলেন। আন্তর্জাতিক বেস্টসেলার এই ডায়েরির বিবরণের ওপর নির্ভর করেই পরিচালক কেভিন ম্যাকডোনাল্ড নির্মাণ করেন দ্য মৌরিতানিয়ান। এরপরই গুয়ানতানামো বে কারাগারের নির্মম নির্যাতন চাক্ষুষ করেন দর্শকেরা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us