বিএনপির তৃণমূলে চলছে পুনর্গঠন। জেলা-উপজেলায় পুরোনো কমিটি ভেঙে নতুন নেতৃত্ব আনা হচ্ছে। শুরুর দিকে পুনর্গঠনের এ উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহ তৈরি হলেও ক্রমেই হতাশ তৃণমূল নেতাকর্মীরা। এর পেছনে দুটি কারণ বলছেন তারা। প্রথমত, কেন্দ্রীয় নেতাদের পছন্দের লোকেরা জেলার শীর্ষ পদ পাচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, জেলার দায়িত্বপ্রাপ্তরা নিজেদের পছন্দের লোক দিয়ে ইউনিট কমিটি করছেন। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন ত্যাগী, যোগ্য ও পরীক্ষিতরা। এ নিয়ে বরিশালসহ দক্ষিণের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় চলছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা নেতারা বলছেন, বিএনপির মতো একটি বড় দলে অসংখ্য যোগ্য নেতা রয়েছেন। তাদের সবাইকে পদ-পদবি দেওয়া সম্ভব নয়।
২২ জানুয়ারি বরিশালের উত্তর ও দক্ষিণ জেলা এবং মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষিত হয়। এসব কমিটি থেকে বাদ পড়েন সাবেক মেয়র ও দলের যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ারসহ তার অনুসারীরা। সদ্য সাবেক কমিটির সিংহভাগ সদস্যকে বাইরে রেখে নতুন কমিটি করা নিয়ে শুরু হয় জটিলতা। কমিটির নানা দোষ-ত্রুটির বিষয়ে কেন্দ্রে বঞ্চিতরা অভিযোগ করে যাচ্ছেন। মহানগরের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক তারিন বলেন, কমিটি গঠনে ত্যাগী নেতাদের বিবেচনা করা উচিত। মহানগরের আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, আহ্বায়ক কমিটির কলেবর ছোট। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের কেউ বাইরে থাকবে না।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন বানারীপাড়ার সাত বিএনপি নেতা। তাদের মধ্যে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য সরফুদ্দিন সান্টু। জেলা কমিটির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান নান্টুর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তারা পদত্যাগ করেন। নান্টুর পালটা অভিযোগ-সভা করতে গিয়ে বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির অফিস তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। সান্টুর ইচ্ছার বাইরে কোনো কিছু করা যাবে না বলে আমাদের জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো এক ব্যক্তির ইচ্ছায় তো দল চলবে না। তাই উপজেলা ও পৌর কমিটি ভেঙে দিয়েছি।
কিছুদিন আগে বাকেরগঞ্জ উপজেলা ও পৌর কমিটি ভেঙে দিয়েছে জেলা কমিটি। উপজেলা বিএনপির টানা ১৯ বছরের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান বলেন, দলীয় কর্মসূচি পালন করবে কে? দল পরিচালনায় জেলার নেতারা কতটুকু যোগ্যতাসম্পন্ন সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। অবশ্য পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, সত্যিকার অর্থেই এখানে একটা পরিবর্তন দরকার। আমরা টানা একক নেতৃত্বের শিকার হচ্ছি। উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খলিল সিকদার বলেন, এখানে দলের অফিস রয়েছে। অথচ সেখানে আসেন না আবুল হোসেন। তিনি তার নিজের বাসায় সাইনবোর্ড লাগিয়ে বিএনপির অফিস খুলে বসেছেন। তার ইচ্ছার বাইরে দলে কিছুই করা যায় না। অভিযোগ সম্পর্কে আবুল হোসেন বলেন, ২০০৩ সালে বরিশাল সফরকালে তারেক রহমান আমার বাসভবনের ওই অফিসটি উদ্বোধন করেন।