বিশালতার মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলার একধরনের স্বস্তি আছে। ঈদুল আজহার ছুটিতে সেই স্বস্তির সন্ধানেই বেরিয়ে পড়েছিলাম। সঙ্গী হিসেবে পেয়ে যাই রোমাঞ্চপ্রিয় একদল মানুষ। দলের সবাই প্রায় অপরিচিত। তাতে অবশ্য আমার সমস্যা হলো না। কারণ, গন্তব্য এক থাকলে অচেনা মানুষও চিরচেনা হতে বেশিক্ষণ লাগে না।
ঢাকার ফকিরাপুল বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম। ঘুম ভাঙলে দেখি ভোরের আলো ফুটেছে। আমরা ততক্ষণে কক্সবাজারের চকরিয়ায়। বাস থেকে নেমে বান্দরবানের আলীকদমের পথ ধরি। সকালে নাশতা হয়নি। পেটের ক্ষুধা সবার চোখেমুখে স্পষ্ট। ছোট একটা হোটেলে নাশতা করি। খাবার খেয়েই ট্যুর–হোস্টের তাগাদা—চান্দের গাড়ি প্রস্তুত। ঠাসাঠাসি করে উঠে পড়ি। ছাদের ওপরে বসে মনে হলো আরব্য রজনীর জাদুর গালিচায় বসেছি। আকাশে হাওয়ায় ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছি। শুধু ‘আলিফ লায়লা, আলিফ লায়লা’ গানটার অভাব বোধ করলাম। তবে তারেক ভাই, ফিরোজ ভাইয়ের কণ্ঠে অন্য গান চলছে। তাদের সঙ্গে আমরাও গলা মেলাই। এভাবে প্রায় ১৭ কিলোমিটার আলীকদম-থানচি রাস্তা ধরে আদু মুরং পাড়ায় পৌঁছানোর আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে থামি। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে আবার যাত্রা শুরু। অপরিচিত মুখগুলো ক্রমেই পরিচিত হতে শুরু করে। একেকজনের একেক প্রতিভা প্রকাশ পেতে শুরু করে। আঁকাবাঁকা, উঁচু–নিচু পথ পেরিয়ে আমরা নেমে পড়ি আদু মুরং পাড়ায়। এবার হাঁটাপথ।