দেশে একটি জনশুমারির ফল সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। মোট জনসংখ্যা সাড়ে ১৬ কোটি। কিন্তু এর মধ্যে মোট কর্মহীন মানুষের সংখ্যা কত কিংবা শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কত, এর কোনো নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান দেশে আছে বলে মনে হয় না। তবে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও যে নেহাত কম নয়, তা বোঝা যায় কোনো চাকরির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে একটি পদের বিপরীতে আবেদনকারীর সংখ্যা দেখেই। লাখ লাখ তরুণ-যুবক বেকার আছেন, শিক্ষাজীবন শেষে চাকরিজীবনে প্রবেশের অপেক্ষায় আছেন। অথচ স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পথ তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন না।
দেশে একদিকে কাজের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে না, অন্যদিকে সরকারি অফিসগুলোতে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্তও অনেক ক্ষেত্রেই বছরের পর বছর ঝুলে থাকছে। এমনকি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচারের পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও এর কার্যক্রম শেষ করা যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর থেকে জানা যায়, প্রশ্নপত্র ফাঁস, নিয়োগবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ না করা এবং অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্যসহ নানা কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার নিয়োগ আটকে আছে। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে নিয়োগ আটকে থাকায় নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন প্রায় ১০ লাখ আবেদনকারী। জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তরের মঞ্জুর করা পদ রয়েছে ৪৪ হাজার ৬৪৫টি। এর মধ্যে বর্তমানে শূন্য পদের সংখ্যা ১১ হাজার ৭।
অচিরেই মাউশির নিয়োগজট খোলার সম্ভাবনা কম। মাউশির চলমান নিয়োগ কার্যক্রম নিয়ে শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ দুই পক্ষের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। মাউশির মতো শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) চলমান ১ হাজার ৪৫৬ জনের নিয়োগ কার্যক্রম আটকে আছে। ২০১৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে ১১ ধরনের পদে এবং ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ১২ ধরনের পদে ১ হাজার ২৬৫ জনকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এসব পদে আবেদনকারীর সংখ্যা লক্ষাধিক। প্রশ্ন হলো, এই যে এত বিপুলসংখ্যক আবেদনকারীর অপেক্ষা কবে শেষ হবে, তা বলার মতো কেউ আছেন কি?