রাশিয়ান সোনা আমদানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং জাপান। চলতি বছরের জুন মাসে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এমন ঘোষণা দেয়। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা জি সেভেনের তিন রাষ্ট্র- যুক্তরাজ্য, কানাডা ও জাপানই নয়; নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা ভাবছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। রাশিয়ার সোনা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে দেশটির সোনা উত্তোলনকারী কম্পানিগুলোর ওপর বিধ্বংসী প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০২১ সালে রাশিয়ান সোনা উত্তোলনকারী কম্পানিগুলো তিনশ ৪৬ মেট্রিক টন সোনা উৎপাদন করে। মোট রপ্তানি করা হয় তিনশ দুই মেট্রিক টন যার বাজার মূল্য ১৭ দশমিক ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মোট রপ্তানির সবচেয়ে বড় অংশ (২৬৬ মেট্রিক টন) রপ্তানি করা হয় যুক্তরাজ্যে। ৮ মেট্রিক টন রপ্তানি করা হয় কাজাখস্তানে, সাত দশমিক ২৫ মেট্রিক টন সুইজারল্যান্ডে এবং পাঁচ দশমিক পাঁচ মেট্রিক টন জার্মানিতে রপ্তানি করা হয়।
রাশিয়ান স্বর্ণ শিল্প এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞার প্রথম প্রভাব দেখছে। ১২ জুলাই দেশটির অন্যতম বৃহত্তম স্বর্ণ উৎপাদক পেট্রোপাভলভস্ক পিএলসি লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে তার শেয়ার স্থগিত করতে বলছে। সেই সঙ্গে সংস্থাটি দেউলিয়া হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে পেট্রোপাভলভস্ক সোনা বিক্রি করতে বা ঋণ পুনঃঅর্থায়ন করতে পারেনি।
রাশিয়ার সোনা রপ্তানি প্রায় বন্ধই হয়ে যায় চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিলে। ওই দুই মাসে দেশটির কম্পানিগুলো বিদেশি ক্রেতাদের কাছে মাত্র একশ কেজি সোনা বিক্রি করে। এর আগে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে ২৭ দশমিক পাঁচ মেট্রিক টন সোনা বিদেশি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান থেকে এই তথ্য প্রকাশ করেছে ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মাইনিং জার্নাল।
রাশিয়ান স্বর্ণ উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে দেউলিয়া হওয়া বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ২১ জুন দ্যা অ্যাসোসিয়েশন অব সাবসয়েল উজার্স অব দ্যা মাগদান রিজিওন এক বিবৃতিতে বলেছে, নিষেধাজ্ঞার কারণে ছোট ও মাঝারি আকারের সোনা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। তাদের মতে, এর ফলে রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলে সোনা উৎপাদন ৪০ শতাংশ বা একশ ২০ মেট্রিক টন কমে যেতে পারে। সেই সঙ্গে এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৪০ হাজার মানুষের চাকরি যেতে পারে।