রক্তের আখরে লেখা আগস্টের মহাট্র্যাজেডি

যুগান্তর মোনায়েম সরকার প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২২, ০৯:৫৬

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মহান স্থপতি। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামের মহানায়ক। তার নির্ভীক নেতৃত্ব ও বিশ্ববিজয়ী ব্যক্তিত্বের কথা আজ বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হলেও একদল সুবিধাবাদী, দেশদ্রোহী ঘাতক, দেশি-বিদেশি চক্রান্তে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। সেই থেকে মধ্য আগস্টের এই দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঘাতকের দল মূলত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকেই হত্যা করতে চেয়েছিল। তারা চেয়েছিল পাকিস্তানি-সামরিক আমলাতান্ত্রিক ও মৌলবাদী ভাবধারায় বাংলাদেশকে পরিচালনা করতে। ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকে’ ঘাতকের দল ‘ইসলামিক রিপাবলিক অফ বাংলাদেশে’ পরিণত করার ঘৃণ্য চক্রান্ত করেছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে জুলফিকার আলী ভুট্টো বাংলাদেশকে ‘ইসলামিক রিপাবলিক অফ বাংলাদেশ’ বলে স্বীকৃতিপত্রও পাঠিয়েছিল। তাদের সেই চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেয় বাংলার লড়াকু মানুষ। বঙ্গবন্ধু এমনভাবে এদেশের নিপীড়িত মানুষের মনে ঠাঁই করে নিয়েছিলেন, তার মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পরেও এদেশের মানুষের মন থেকে তার অমর নাম মুছে ফেলতে পারেনি ধিকৃত হন্তারকরা। সোনা যত আগুনে পোড়ে, ততই সে খাঁটি হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শও দিনে দিনে উজ্জ্বল হয়ে, দশদিকে আশার আলো ছড়িয়ে দিয়েছে। সে চোখ ধাঁধানো আলোয় ধীরে ধীরে উদ্ভাসিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ ও দর্শনকে হত্যা করতে পারেনি নিষ্ঠুর ঘাতকের দল। ব্যক্তির চেয়ে ব্যক্তি প্রবর্তিত আদর্শ ও দর্শন অনেক বেশি শক্তিশালী হয়, ইতিহাস সেটা বারবার প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশের মানুষও উদাহরণ সৃষ্টি করেছে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনে আস্থা রেখে।


আজকের আধুনিক ও উন্নয়নমুখী বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সদম্ভে এগিয়ে যাচ্ছে বটে, তবে এর পেছনে রয়েছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘকালের লালিত স্বপ্ন ও তার অভিনব রাজনৈতিক দর্শন। আমি বঙ্গবন্ধুকে কাছে থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি। পেয়েছি তার আদর ও আলিঙ্গন। বঙ্গবন্ধুর জাদুকরি স্পর্শ এখনো আমি অনুভব করি আমার সত্তা জুড়ে। তাকে যত দেখেছি, ততই তার নেতৃত্বের গুণাবলি ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দেখে অভিভূত হয়েছি। সত্যিকার অর্থেই তিনি বাঙালি জাতির অকৃত্রিম দোসর ছিলেন। বাংলাদেশবিরোধী চক্র বুঝেছিল শেখ মুজিবকে নিশ্চিহ্ন করতে না পারলে বাংলাদেশকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। তাই তারা রাতের আঁধারে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। তার রাজনৈতিক দর্শনকে যারা বুকের ভেতর আঁকড়ে ধরে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন, সেই জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামানকে বন্দি অবস্থায় ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ জেলের ভেতর হত্যা করা হয়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি করার জন্যই ১৫ আগস্টের পরে আওয়ামী লীগের ওপর দমন-পীড়ন মাত্রা ছাড়িয়ে যায়।


যে বঙ্গবন্ধু পরাধীন বাংলাকে স্বাধীনতা এনে দিয়ে যান, তার নামও উচ্চারণ করা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের তথা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসীদের গ্রেফতারের ফলে কারাগারগুলো ভরে যায়। এমন পরিস্থিতিতে অনেকের মতো আমিও দেশ ছাড়তে বাধ্য হই। স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যাই পড়শি রাষ্ট্র ভারতে। কলকাতার মাটিতে বসে দেশে-বিদেশে বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলি। ১৯৭৬ সালে দিল্লিতে ও লন্ডনে বঙ্গবন্ধু-স্মরণে যে দুটি শোকসভা হয়, তার নেপথ্যে যে কজন মানুষ অমানুষিক পরিশ্রম করেছিলেন-তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us