নাটোরে এক কলেজছাত্রকে বিয়ে করে আলোচনায় আসা আরেক কলেজের শিক্ষিকা খাইরুন নাহারের (৪৫) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার সকালে শহরের বলারীপাড়া এলাকার একটি বাড়ির চতুর্থ তলার ফ্ল্যাট থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। খাইরুন ওই ফ্ল্যাটে স্বামী মামুন হোসেনকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। ঘটনার পর পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামুনকে আটক করেছে।
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য উল্লেখ করে পুলিশ সুপার (এসপি) রিটন কুমার সাহা গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন, টাকা-পয়সা নিয়ে গত শনিবার রাতে মামুনের সঙ্গে খাইরুনের ঝগড়া হয়। এরপর রাত সোয়া ২টার দিকে মামুন বাসা থেকে বাইরে চলে যান। তখন খাইরুন তাঁকে ফিরে আসার অনুরোধ করলেও তিনি ফেরেননি। এরপর ভোর ৬টার দিকে বাসায় ফিরে দেখেন, ওড়না দিয়ে খাইরুন ফাঁস লাগানো অবস্থায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন। তখন বঁটি না পেয়ে গ্যাস লাইটার দিয়ে ওড়না পুড়িয়ে খাইরুনের মরদেহ নিচে নামান মামুন।
এসপি জানান, খাইরুনের টাকা-পয়সা মামুন ভোগ করলেও আগের ঘরের ছেলেকে টাকা দিতে চাইছিলেন না। এ নিয়ে কিছুদিন ধরে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল।
এসপি রিটন কুমার সাহা জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাঁরাও প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, কলেজ শিক্ষিকা আত্মহত্যা করেছেন। তবে এ ঘটনায় তাঁর স্বামী মামুনের বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগ আনা হবে।
এসপি আরো জানান, তাঁরা ওই দম্পতির ভাড়া বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। তাতে রাত ২টা ১৭ মিনিটের দিকে মামুনকে বাসার বাইরে যেতে দেখা গেছে। আরেকটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে ওই বাসার দেড় কিলোমিটার দূরের জেলগেটের। তাতে কারারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে মামুনকে।
তবে ওই কলেজ শিক্ষিকার আত্মীয়দের অভিযোগ, খায়রুনকে হত্যা করা হয়েছে। খাইরুনের চাচাতো ভাই ইউনুস আলী অভিযোগ করেন, এরই মধ্যে মামুন তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি আধাপাকা করেছেন। ওই টাকা একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন খাইরুন।