প্রিয়জনের মৃত্যুতে মহানবী (সা.) যেভাবে শোক প্রকাশ করেছেন

কালের কণ্ঠ প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২২, ০৮:৫০

পৃথিবীতে মানুষ আনন্দ ও বেদনার মধ্য দিয়ে যায়। সুখে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ আর দুঃখে ধৈর্য ধারণ করা ঈমানের দাবি। ঈমানদার সুখে আত্মহারা হয়ে আল্লাহকে ভুলে যায় না, তেমনি দুঃখে ধৈর্যহারা হয়ে আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয় না। বিভিন্নভাবে মানুষের জীবনে দুঃখ-বেদনা আসে, তবে প্রিয়জনকে হারানোর দুঃখ-বেদনা কঠিন বাস্তবতা। প্রিয়জনের মৃত্যুর ফলে পাওয়া দুঃখকেই সাধারণত শোক বলা হয়।


নবীজি শোকার্ত হয়েছিলেন : নবী (সা.)-এর জীবনেও শোক এসেছে। বিভিন্ন সময়ে তাঁর প্রিয়জনদের হারাতে হয়েছে। জন্মের আগে পিতাকে আর ছয় বছর বয়সে মমতাময়ী মাকে হারান। আট বছর বয়সে দাদাকে হারিয়ে একেবারে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁর লালনপালনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন চাচা আবু তালিব। নবুয়তের দশম বছরের রমজান মতান্তরে শাওয়াল মাসে নবী (সা.)-এর চাচা আবু তালিব ইন্তেকাল করেন। এই শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই তিন বা পাঁচ দিনের ব্যবধানে তাঁর সহধর্মিণী খাদিজাতুল কুবরা (রা.) ইন্তেকাল করেন। নবী (সা.)-এর জীবনে এই দুজনের অবদান ছিল অনেক বেশি। তাঁরা দুজনই ঘরে ও ঘরের বাইরে নবী (সা.)-কে শক্তি-সাহস জোগাতেন এবং কুরাইশ কাফিরদের জুলুম-অত্যাচার থেকে যথাসাধ্য রক্ষা করতেন। তাঁদের ইন্তেকালে রাসুল (সা.) শোকার্ত হয়ে পড়েন। নবী (সা.)-এর এমন প্রিয় দুজন ব্যক্তির ইন্তেকালের কারণে ওই বছরকে ‘আমুল হুজুন’ বা ‘শোকের বছর’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। [মুহাম্মদ ইদরিস কান্ধলভি, সিরাতুল মুস্তাফা, ১ম খণ্ড (দেওবন্দ : দারুল কিতাব, তা. বি.), পৃ. ২৭১]


এ ছাড়া নবী (সা.)-এর ছেলেমেয়েদের মধ্যে ফাতিমা (রা.) ছাড়া সবাই তাঁর জীবদ্দশায় ইন্তেকাল করেন। সন্তান হারানোর শোক তাঁকে সইতে হয়েছে।


ইসলামে শোক প্রকাশের রীতি : আপনজনের মৃত্যুতে সীমাহীন কষ্ট হওয়া স্বাভাবিক। মহান আল্লাহ এই কষ্টের বিনিময় দান করবেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে সেই প্রতিদান প্রাপ্তির আশায় ধৈর্য ধারণ করতে হবে। ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ (নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাব) বলে আল্লাহর দিকে ধাবিত হতে হবে। ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। মনকে শক্ত করার চেষ্টা করতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি যার কোনো প্রিয়জনকে উঠিয়ে নিই আর সে ধৈর্য ধারণ করে এবং নেকির আশা রাখে আমি তাকে জান্নাত দিয়েই সন্তুষ্ট হব। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪০১)


তার পরও নীরব কান্নায় চোখ অশ্রুসজল হবে। মনের বেদনায় চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরতে থাকবে। তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু চিত্কার করে, ইনিয়ে-বিনিয়ে, বুক চাপড়ে কাঁদা, মাতম করা এবং জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলা ইসলামের পদ্ধতি নয়। এগুলো জাহিলি যুগের কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি। আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, যে শোকে গালে চপেটাঘাত করে, জামার অংশবিশেষ ছিঁড়ে ফেলে এবং জাহিলি যুগের মতো চিত্কার করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (বুখারি, হাদিস : ১২৩৫; মুসলিম, হাদিস : ২৯৬)


বিধবা নারীর শোক প্রকাশ : স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর ইদ্দত পালনের একটি বিষয় রয়েছে। গর্ভবতী হলে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত আর গর্ভবতী না হলে চার মাস ১০ দিন পর্যন্ত ইদ্দত পালন করতে হয়। অর্থাৎ এই সময়টায় অন্যত্র বিয়েশাদি করা যায় না। ইদ্দত চলাকালীন সময়ে শোকের প্রভাব থাকে। সাজসজ্জা, বিয়েশাদি পরিহার করে অনেকটা নির্জনতায় সময় কাটাতে হয়। এরপর স্বাভাবিক জীবন শুরু হয়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাদের স্ত্রীরা চার মাস ১০ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে। যখন তারা তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করবে তখন যথাবিধি নিজেদের জন্য যা করবে তাতে তোমাদের কোনো গুনাহ নেই। তোমরা যা করো আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৩৪) 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us