রিকশা দেখেই রাস্তার পাশের এক খাবারের দোকান থেকে একজন ডাকাডাকি শুরু করে দিলেন, 'কম টেকায় খাইয়া যান, নামেন মামা নামেন।' কম টাকার কথা শুনে হয়তো কিছুটা আশ্বস্ত হয়েই রিকশা দাঁড় করিয়ে ফুটপাতের খাবারের দোকানের বেঞ্চিতে বসে ভাতের অর্ডার করলেন মো. আলমগীর।
দোকানি ভাতের ওপর সামান্য পরিমাণে আলু-করলার ভাজি দিয়ে প্লেটটা আলমগীরের সামনে দিলেন। আলমগীর সঙ্গে আলু ভর্তা ও ডাল চাইলেন। মুখভর্তি ভাত থাকা অবস্থায়ই জানতে চাইলে ডিম কত? দোকানি জানালেন,৩০ টাকা।
কী একটা ভেবে আলমগীর বললেন, 'দরকার নাই, হাফ ভাত, আর একটু ডাল দেন।'
ভাতের দোকানি শফিকুল ইসলামের কাছ থেকে জানা গেল, এতদিন ডিম তরকারি ২৫ টাকা ছিল, দাম বেশি হওয়ায় ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। শুধু এই কারণে প্রতিদিন যেখানে ৬০-৭০টি ডিম বিক্রি হতো সেটা এখন ৪০-৪৫ এ নেমেছে।
শনিবার দুপুরে এই চিত্র দেখা গেল সেগুনবাগিচার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনের রাস্তার খাবারের দোকানে। যেখানকার মূল ক্রেতা রিকশাচালক, সিএনজি ড্রাইভার, দিনমজুর সহ বিভিন্ন পেশার নিম্ন আয়ের মানুষজন। দুই-তিন পদের ভর্তা, ভাজি, শাক, ডিম, ডাল, মুরগির লটপটি (পা, মাথা, চামড়া, গলার হাড়, কলিজা), তেলাপিয়া মাছের তরকারি ইত্যাদি এখানকার প্রধান আইটেম।
কারওয়ান বাজার, ইস্কাটন সহ কয়েকটি জায়গায় রাস্তার পাশের খাবারের দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বেশিরভাগই এখন ডিমের দাম ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করেছে, দুয়েকজন দোকানি জানালেন এক-দুদিনের মধ্যেই তারাও দাম বাড়াবেন। একইসঙ্গে মুরগির লটপটির দামও ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে।
বাড়তি দামের কারণে আলমগীরের মত নিম্ন আয়ের অনেকে ডিম খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছে। সীমিত ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলোও ডিমের তরকারি দিয়ে যে ভাত খাবে সে অবস্থাও সংকুচিত হয়ে পড়ছে।