দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সে দেখা দেওয়া প্রবল দাবানলের বেশির ভাগই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে, তার পরও অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা। ফলে ‘জটিলতায় ভরা’ দিন পার করেছেন তাঁরা। গতকাল শুক্রবার এভাবেই নিজেদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
জানা গেছে, জিহঁদে ও লাঁদেস এলাকায় প্রায় ৪০ কিলোমিটারজুড়ে চলমান দাবানল নতুন জায়গায় ছড়াতে পারেনি।
তবে পরিস্থিতি অনেকটাই প্রতিকূল হয়ে আছে আবহাওয়ার কারণে। অগ্নিনির্বাপণ বাহিনীর ডেপুটি প্রিফেক্ট রোনান লস্টিক বলেছেন, ‘সর্বদা সতর্ক’ ভূমিকায় থাকতে হচ্ছে দমকলবাহিনীকে।
তিনি আরো জানান, আগে যে ১০ হাজার মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে সরে যেতে বলা হয়েছিল, সেটাই বলবত্ আছে। নতুন করে আর কাউকে সরে যেতে বলা হয়নি।
শুক্রবার লস্টিক বলেন, ‘আজ হয়তো জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেহেতু তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পানির স্তরের নিচে নামা অব্যাহত রয়েছে। ’
এবারের গ্রীষ্মে ঐতিহাসিক খরার সম্মুখীন হয়েছে ফ্রান্স। পরিস্থিতি এতটাই প্রতিকূলে দাঁড়িয়েছে যে দেশজুড়ে পানি ব্যবহারেও লাগাম টানা হয়েছে।
ধারাবাহিক দাবদাহের কবলে থাকা দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এমনটা হয়েছে।
ফ্রান্সের জন্য চলতি বছরের জুলাই ছিল ১৯৬১ সালের পর সবচেয়ে শুষ্ক মাস। দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রবল দাবানল এই মাসটিতেই শুরু হয়। নিয়ন্ত্রণে আসার আগে ১৪ হাজার হেক্টর এলাকা গ্রাস করে ওই দাবানল।
শুধু ফ্রান্স নয়, স্পেন ও পর্তুগালেও দাবানলের প্রকোপে এ বছর হাজার হাজার হেক্টর এলাকা ধ্বংস হয়েছে। শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ সেবা সংস্থা জানিয়েছে, ২০২২ সালে দাবানলের দিক থেকে রেকর্ড বছর পার করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপ।
কোপার্নিকাস অ্যাটমস্ফিয়ার মনিটরিং সার্ভিস (ক্যামস) নামের ওই সংস্থাটি বলছে, গত তিন মাসে দাবানলের কারণে সর্বোচ্চ মাত্রার কার্বন দূষণকারীর স্থানে উঠে এসেছে ফ্রান্স। এসংক্রান্ত রেকর্ড ২০০৩ সাল থেকে রাখা শুরু হয়েছে।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে স্পেন। গত মাসেই দাবানলের কারণে সর্বোচ্চ কার্বন নিঃসরণের রেকর্ডটি গড়েছে তারা।